যে কারণে খুশির আবহাওয়া আইআইটি জুড়ে। ২০০০ সালে ভারতের প্রযুক্তিবিদ্যার প্রাচীনতম কেন্দ্র আইআইটি খড়্গপুর থেকে মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে বি.টেক পাস করেন তিনি। এরপর সামাজিক ক্ষেত্রে তাঁর অবদান এনে দিল এই সর্বোচ্চ সম্মান।
আরও পড়ুন: বরফের মতো গলবে চর্বি! ঝরবে পেটের মেদ…রাতে শুধু খেতে হবে এই একটি জিনিস
advertisement
‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত হচ্ছেন আইআইটি খড়্গপুরের প্রাক্তনী বিনায়ক লোহানি। আইআইটি খড়গপুর থেকে বিটেক করার পাশাপাশি, তিনি আই.আই.এম কলকাতা থেকে এমবিএও করেছেন। এমবিএ করার পর দামি দামি চাকরি ছেড়ে তিনি নিজেকে নিযুক্ত করেছিলেন সমাজের সুবিধাবঞ্চিত ছেলে মেয়েদের শিক্ষার অগ্রগতিতে।
প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা নয়, তিনি শিক্ষার পর এক অপ্রচলিত পথ বেছে নিয়েছিলেন, সমাজে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সেবায় তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। এই কাজ করার জন্য মোটা অংকের বেতনে তিনি চাকরিও ত্যাগ করেছেন। সমাজের প্রতি তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে সম্মানিত করার জন্য মনোনীত হয়েছেন তিনি।
রামকৃষ্ণ এবং বিবেকানন্দের দেখান পথেই তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তাঁদের ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়, মানুষের মধ্যেই যে ঈশ্বর রয়েছে তাঁর সংকল্প নিয়ে ২০০৩ সালে “পরিবার” প্রতিষ্ঠা করেন। কলকাতার কাছে একটি ছোট ভাড়া বাড়িতে মাত্র তিন ছেলে মেয়েদের নিয়ে নিয়ে শুরু করেন তার আগামীর পথ চলা। তিনজন ছাত্র দিয়ে শুরু হওয়া এই পরিবার বর্তমানে ২১০০ সুবিধা বঞ্চিত জন ছেলেমেয়েদের এক অনন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
যেখানে থেকে ছেলেমেয়েরা মানুষের মত মানুষ হচ্ছে, যার অভিভাবক আইআইটির প্রাক্তনী বিনায়ক লোহানি। ইতিমধ্যে পূর্ব ভারতের একাধিক জায়গায় তার এই প্রতিষ্ঠান প্রসারিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই বিনায়ক লোহানির প্রতিষ্ঠিত এই পরিবার সংস্থা, পশ্চিমবঙ্গে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পরিবারের দুটি আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে- ছেলেদের জন্য পরিবার বিবেকানন্দ সেবাশ্রম এবং মেয়েদের জন্য পরিবার সারদা তীর্থ।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে উঠে আসা নিঃস্ব পরিবারের ছেলেমেয়েদের শিক্ষাদান এবং তাদের উচ্চ শিক্ষায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি সমাজের সঙ্গে লড়ে যাচ্ছেন।। পাঁচ বছর বয়স থেকে ছেলে এবং মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত তিনি সযত্নে লালন পালন করছেন। শুধু তাই নয় ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রদেশে, শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্য এবং সামাজিক অগ্রগতিতে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছেন।
গ্রামীণ অবহেলিত মানুষদের সেবা, আর্তি করা, গ্রামীণ মানুষদের চিকিৎসা এবং তাদের ন্যূনতম পাঠাদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন আইআইটি খড়্গপুরের এই প্রাক্তনী। মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে বিটেক পাশ, করেছেন এমবিএ, লক্ষাধিক টাকা চাকরি ছেড়ে সমাজের প্রতি তার এই ভাবনা, সমাজের অবহেলিত শিশুদের শিক্ষার আলোক বর্তিকায় আনা, এবং সমাজের প্রতি তার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে। স্বামী বিবেকানন্দ ও রামকৃষ্ণের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বিনায়ক লোহানি সারা দেশের কাছে এক পথপ্রদর্শক।
রঞ্জন চন্দ