এরপরেই মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই অনুর্বর মাটি তুলে ফেলে সেখানে উর্বর মাটি ভরাট করেন। আর এই মাটি ভরাট করার জন্য মহর্ষি, রাজা রামমোহন রায়ের বাড়িতে যিনি মালির কাজ করতেন তাকে নিয়ে আসেন।তবে কবে এই অম্রকুঞ্জ গাছগুলি রোপন করা হয় সেই বিষয়ে সঠিক ধারণা বর্তমানে কারোর কাছেই নেই। এখানে যেমন একদিকে অম্রকুঞ্জ গাছের বিরাট বড় বাগান রয়েছে ঠিক অন্যদিকে রয়েছে বকুলবিথি এবং তার সামনে রয়েছে শালবিধি। আগে ঠিক এই জায়গাতেই অবস্থিত ছিল একটি বেদী। পরবর্তীকালে সেই বেদীর নাম দেওয়া হয় জোহর বেদি, অর্থাৎ জহরলাল নেহেরুর নাম অনুসারে এই বেদির নামকরণ করা হয়।
advertisement
মূলত প্রকৃতির মাঝে শিক্ষা দেওয়ার জন্যই এই বেদিগুলি প্রতিষ্ঠিত হয়। আর এই কারণেই এই অম্রকুঞ্জ এলেই চারিধারে দেখতে পাবেন একাধিক বেদি রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রকৃতির মাঝে বড় করে তোলার জন্যই খোলা আকাশের নীচে শিক্ষাদান করা হয়।অম্রকুঞ্জ যেহেতু অনেকটা এলাকা জুড়ে অবস্থিত সেই কারণেই এখানে সমাবর্তন জাতীয় অনুষ্ঠান গুলি হয়ে থাকে। তবে সম্ভবত ১৯৫৭ সালের বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু তখন ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য তিনি ঠিক করেন এই সমাবর্তন অনুষ্ঠান গুলি হবে উত্তরায়নের ভেতরে। তখন বিশ্বভারতীর আচার্য ছিলেন জওহরলাল নেহেরু।
তখন তিনি সত্যেন্দ্রনাথ বসুর এই সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিবাদ করেন তিনি বলেন অম্রকুঞ্জ এর ভেতরে অনুষ্ঠান না হলে বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য লঙ্ঘন হবে। তবে থেকেই আজ পর্যন্ত এখানেই বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এছাড়াও বোলপুর শান্তিনিকেতনের যে বসন্ত উৎসব সেই বসন্ত উৎসব বর্তমানে হয়ে থাকে আশ্রম মাঠে অথবা ছোট আকারের আয়োজন হলে হয়ে থাকে গৌড় প্রাঙ্গণে তবে ১৯৮২ সালের আগে পর্যন্ত এই বসন্ত উৎসবের আয়োজন হত অম্রকুঞ্জ-এর মাঠে। তাই বোলপুর শান্তিনিকেতন গেলে অবশ্যই ঘুরে আসুন এই জায়গা থেকে।
সৌভিক রায়