ললিথ নিজের স্ত্রী ও সদ্যোজাত সন্তানকে নিয়ে ছত্তীশগড় থেকে কলকাতায় এসেছিলেন ১৩ বছর আগে। তখন তিনি ছিলেন যুবক। স্ত্রীর মানসিক চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আসেন তাঁরা। তখন চলছিল গঙ্গাসাগর মেলা। সেই ভিড়ের স্রোতে স্ত্রী ও সন্তানকে হারিয়ে ফেলেন ললিথ।
আরও পড়ুন: সচিন থেকে শাহরুখ! তারকাদের ভিড়ে হাজির ভুলে যাওয়া শিল্পীরাও, কিরণ বাদে সপরিবার আমিরের ছবি
advertisement
এরপর দীর্ঘ সময় খোঁজাখুঁজি করেও কোনও স্ত্রী-পুত্রের কোনও খোঁজ পাননি ললিথ। ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বাড়ি ফিরে সিদ্ধান্ত নেন তিনি জীবনে আর বিয়ে করবেন না। এরপর প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলা এলেই নিয়ম করে খোঁজ নিতেন স্ত্রী-পুত্রের। তিনি বিশ্বাস করতেন একদিন স্ত্রীকে ফিরে পাবেন। তাঁর সেই বিশ্বাস মিলিয়ে দিয়েছে স্ত্রীকে। সৌজন্যে, কলকাতা পুলিশের ফুলবাগান থানার এসআই মৌসুমী চক্রবর্তী ও বিশ্বজিৎ সিনহা মহাপাত্র।
ললিতের স্ত্রীকে ২০১০ সালেই উদ্ধার করেছিল কলকাতা পুলিশ। বিমানবন্দরের কাছ থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়, কোলে ছিল ১১ দিনের শিশু। মানসিক সমস্যা ছিল স্ত্রীর। পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে। তারপর বিসি রায় শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় সদ্যোজাতকে। ললিতের স্ত্রী তখন কোনও তথ্যই পুলিশকে দিতে পারেননি। এরপর আদালতের নির্দেশে প্যাভলভ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গুরবারিকে। এরপর গুরবারিকে সুস্থ করার কাজ শুরু হয়। দীর্ঘদিন পর গুরবারি সম্পূর্ণ সুস্থ হলে শুরু হয় পুলিশের তৎপরতা। যদিও গুরবারি অতীতের অনেক কিছুই তখন ভুলে গিয়েছেন। তবুও যা বলেছেন তার উপর ভিত্তি করে সাব ইনস্পেক্টর মৌসুমী চক্রবর্তী এবং বিশ্বজিৎ সিনহা মহাপাত্র কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন।
এরপর ফুলবাগান থানার ওসি সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বিলাসপুর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আর তখনই বেরিয়ে আসে ঠিকানা। জানা যায়, শক্তি থানার কিরারি গ্রামে তাঁর বাড়ি। তখন শক্তি থানা থেকে গ্রামে গিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের ছবি পাঠায় হোয়াটসঅ্যাপে। যা দেখে চিনতে পারেন গুরবারি। তারপর পুলিশ খবর দেয় স্বামী ললিতকে। ১৩ বছর পর স্ত্রীর খোঁজ পেয়ে ছুটে আসেন ললিত, নিয়ে যান ছেলে ও স্ত্রীকে। আর এভাবেই এক গঙ্গাসাগরে স্ত্রীকে হারিয়ে অপর এক গঙ্গাসাগরে স্ত্রীকে ফিরে পেলেন ললিত।
নবাব মল্লিক






