তথ্যচিত্রে উঠে এসেছে গত ২৪ বছর ধরে চন্দননগর বইমেলার নানা থিম। চন্দননগর বইমেলা প্রত্যেকবার সেজেছে নতুন নতুন আঙ্গিকে। নিত্য-নতুন বিষয় ভাবনায় আজকের চলতি ভাষায় যা “থিম”। এই থিমেই কখনA চন্দননগরে রবীন্দ্রনাথ, কখনও অন্তরালে হারিয়ে যাওয়া বিপ্লবীদের কথা, কখনও আলোকশিল্প থেকে ভাস্করচর্চা, তো কখনও চন্দননগরে ৪৭টি ঘাটের ইতিহাস। আর প্রত্যেকবারই প্রকাশিত হয়েছে নির্দিষ্ট বছরের থিমের ওপর হারিয়ে যাওয়া ইতিহাসের ওপর গবেষণামূলক পুস্তিকা। আর তাই তো আপামর জনগণ জানতে পারে ফরাসভাঙার প্রাচীন ইতিহাস। এবারের বইমেলার বিগত ২৪ বছরের পথচলার ইতিহাসকে থিম করে নাম দেওয়া হয়েছে, “২৫শে চন্দননগর বইমেলা”।
advertisement
আরও পড়ুন: ইতিহাস গড়ল ইস্টবেঙ্গল! সাফ ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ জিতল লালহলুদের মহিলা ফুটবল দল
চন্দননগর বইমেলায় গত চব্বিশ বছরে এসেছেন নানা গুণীজন। এবারে তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। শিল্পী-সাহিত্যিক-গুণিজন-খেলায়াড়দের নিয়ে আগামী ২৩ ডিসেম্বর ২৫তম বইমেলার উদ্বোধনে বসবে চাঁদেরহাট। বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির দুই বর্ষীয়ান সাহিত্যিক অমর মিত্র ও স্বপ্নময় চক্রবর্তী। উপস্থিত কবি-সাংবাদিক তাপস মহাপাত্র সহ বইমেলার উদ্যোক্তারা।
গত ২৪ বছরের ইতিহাসসমৃদ্ধ তথ্যচিত্র প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসে উচ্ছ্বসিত বাংলার দুই প্রতিথযশা সাহিত্যিক। ২০০১ সালে বঙ্কিম পুরস্কার ও ২০০৬ সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পাপ্ত সাহিত্যিক অমর মিত্র বলেন, বইকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। বাংলা ভাষায় বই পড়তে হবে। তবেই সাহিত্যের ব্যাপ্তি বাড়বে।
২০০৫ সালে বঙ্কিম পুরস্কার ও ২০১৫ সালে আনন্দ পুরস্কারে সম্মানিত সাহিত্যিক স্বপ্নময় চক্রবর্তী বলেন, চন্দননগর বইমেলা এগিয়ে চলুক প্রজন্মের হাত ধরে।
আরও পড়ুন: ইতিহাস গড়ল ইস্টবেঙ্গল! সাফ ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ জিতল লালহলুদের মহিলা ফুটবল দল
গত ২৪ বছরে চন্দননগর বইমেলার আয়োজন করে আসছে চন্দননগর ইস্পাত সংঘ ও বইমেলা কমিটি । ক্লাব ও বইমেলা কমিটির সম্পাদক সুশান্ত সিংহ বলেন, চন্দননগর হাসপাতাল মাঠে ২৫তম বইমেলা শুরু হতে চলেছে আগামী ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৫। চলবে ১লা জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত। দুপুর ২টো থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। আয়োজক সংস্থা “চন্দননগর ইস্পাত সংঘ” সহযোগিতায় “চন্দননগর পৌরনিগম”। এছাড়া চন্দননগরের বিভিন্ন ক্লাব এবং পুস্তাকাগারগুলিও সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
গত ২২ বছর ধরে চন্দননগরের বিপ্লবী ও মনীষীদের শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে “যে ধ্রুবতারা”। ২৫তম বইমেলায় “যে ধ্রুবতারা”র নির্বাচিত সংকলন ইতিহাস আকারে প্রকাশিত হবে। এছাড়াও গত ৩৫ বছর ধরে ইস্পাত সংঘ-এর উদ্যোগে প্রকাশিত হচ্ছে ত্রৈমাসিক পত্রিকা “আবিষ্কার”। চলমান এই পত্রিকার উদ্দেশ্য হল নতুন লেখকদের প্রতিভাকে মুদ্রিত আকারে স্থান দেওয়া। চন্দননগর বইমেলা সংগঠিত করার উদ্দেশ্যই ছিল “বই পড়ো ও ছাত্রছাত্রীদের বই কিনতে উৎসাহিত করো”। সেই হেতু বিনামূল্যে ছাত্র ছাত্রীদের জন্য প্রবেশপত্র বিতরণ করা হয়।
এই বইমেলায় ছোট বড় মিলে ৭০টি স্টল, লিটল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়ন এবং সাংস্কৃতিক মঞ্চে সজ্জিত হবে মেলাপ্রাঙ্গণ। যে কোনো মেলাই হচ্ছে বহু মানুষের মিলন ক্ষেত্র। এই মেলা এখন চন্দননগরের গর্ব শহর ছাড়িয়ে সমগ্র হুগলি জেলার মানুষের মনেও একটা জায়গা করে নিয়েছে। তাই আমাদের সকলের দৃঢ় বিশ্বাস আগামী প্রজন্ম এই মহৎ উদ্যোগকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে, জানালেন চন্দননগর ইস্পাত সংঘ ও বইমেলা কমিটির সভাপতি সুশান্ত সিংহ।
