মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাণীমা খাতুন। বাড়ি নদিয়ার মুরুটিয়া থানার বালিয়াকান্দি গ্রামে। সোমবার মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দিনে তাকে বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগে বালিয়াকান্দির বাসিন্দা রাণীমা খাতুনের বিয়ে হয় প্রতিবেশীর যুবক সাহারুল শেখের সঙ্গে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই রাণীমার পড়াশোনায় আপত্তি জানায় সাহারুলের পরিবার। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাণীমা কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল। লকডাউনের জেরে স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুলে যেতে হয়নি। তাই সেটা বাড়তি সুবিধাও হয়েছিল। রাণীমা আশা করেছিল আনলাইনেই সম্ভবত মাধ্যমিক হবে। কিন্তু যখনই অফলাইনে পরীক্ষার কথা ঘোষণা হয়, তখন তাঁর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।
advertisement
আরও পড়ুন: ৪ দিনের পরীক্ষা সূচি বদল, উচ্চমাধ্যমিকের নয়া দিনক্ষণ ঘোষণা করল সংসদ, জেনে নিন...
রাণীমার আসন পড়েছিল গোয়াবাড়ি নেতাজি বিদ্যাপীঠে। পরীক্ষার দিন সকালে স্কুলের পোশাক পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতেই বাড়িতে শুরু হয় তুমুল ঝামেলা। অভিযোগ, স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির কেউ পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে দিচ্ছিলেন না। শুধু তাই নয় মা মায়ের সঙ্গে পরীক্ষার্থীকে ঘরে বন্ধ করে রাখেন বলেও অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মুরুটিয়া থানা পুলিশ। পুলিশকে দেখে অভিযুক্তরা চম্পট দেয়। এরপর পুলিশের তৎপরতায় ওই পরীক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছন। সেখানে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা হয়।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকের পর উচ্চ মাধ্যমিকেও বন্ধ থাকছে ইন্টারনেট, সংসদ যা জানাল
রাণীমা জানিয়েছেন, স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন চাইতেন না আমি পড়াশোনা করি। তা সত্ত্বেও আমি লুকিয়ে লুকিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিইয়েছি। কিন্তু আজ স্কুলের পোশাক পরতেই বাধা দেওয়া শুরু হয়। আমাকে আর মাকে ঘরের ভিতরে আটকে রাখে। পুলিশ এসে উদ্ধার করে। পুলিশের জন্যই আমি পরীক্ষায় বসতে পেরেছি। তবে এতকিছুর পরেও ভয় কাটছে না রাণীমার। তাঁর আশঙ্কা এরপরে শ্বশুরবাড়ি গেলে বড় অশান্তি হতে পারে। মুরুটিয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, রাণীমার যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সে দিকে নজর রাখা হবে।
Samir Rudra