২০২৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাদুতলা রেঞ্জের মৌপাল বিটের শালবনী এলাকায় মৃত্যু হয় দু’জনের। জমির আলু রক্ষা করতে গিয়ে হাতির হানায় মৃত্যু হয় টুকেশর মান্ডি (৪৯) ও ভাস্কর কিস্কুর (৩৬)। ১৬ মার্চ কেশিয়াড়িতে হাতির হানায় মৃত্যু হয় কেশিয়াড়ি হাই স্কুলের এক শিক্ষকের। হাতি দেখতে গিয়ে দলছুট একটি হাতি পিষে দিয়েছিল শিক্ষক বাদল চন্দ্র দত্তকে। এরপর হাতি দেখতে গিয়ে কেশিয়াড়িতে হাতি হানায় মৃত্যু হয় এক নাবালকের। এরপর গত ৩১ ডিসেম্বর কেশপুরে হাতির হানায় মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। মৃত ওই ব্যক্তির নাম নিমাই ভূঁইয়া (৫৪)।
advertisement
চলতি বছর জানুয়ারি মাসের শুরুতে হুমগড়ে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। এরপরে দাঁতন থানার মহারুই এলাকায় মৃত্যু হয় একজন বৃদ্ধের। সম্প্রতি মঙ্গলবার গোয়ালতোড় থানা এলাকায় এবং জঙ্গলমহলের অপর একটি জেলা ঝাড়গ্রামের কুলটিকরী এলাকায় মৃত্যু হয় দু’জনের। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যাক টু ব্যাক দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই হাতি এবং মানুষের সংঘাত নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা যাচ্ছে।
বন বিভাগের তরফে প্রতিদিনই মানুষকে সচেতন করা হয়। হাতি যে জায়গায় অবস্থান করছে, তার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে মানুষকে সচেতন করেন বন বিভাগের কর্মীরা। তবুও যেন অতি উৎসাহে মানুষ পৌঁছে যায় হাতির কাছে। অন্যদিকে হাতির প্রতিরোধস্পৃহা থেকেই হাতির আক্রমণে বেঘোরে প্রাণ যায় অনেকের। তবে জানেন, প্রতিনিয়ত কেন হাতি এবং মানুষের সংঘাত লেগে রয়েছে? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এর মধ্যে মূলত দু’টি কারণ রয়েছে।
প্রথমত, জঙ্গলের তুলনায় লোকালয়ে খাবারের প্রাচুর্য থাকায় জঙ্গল থেকে লোকালয়ে আসছে হাতির দল। সেই রাস্তায় কেউ এলে তাঁর প্রাণহানি ঘটছে। অন্যদিকে জঙ্গলে হাতি থাকায় অতি উৎসাহে মোবাইল নিয়ে হাতির কাছে পৌঁছে যান অনেকে। এতেই নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনে। প্রসঙ্গত, রাতের অন্ধকারে হাতিদের মূলত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সম্প্রতি কুলটিকরী এলাকায় হাতিকে অন্যত্র ড্রাইভ করা হলেও দু’টি হাতি এলাকায় থেকে যায়। এরপর সাতসকালে হাতির সামনে পড়ে মৃত্যু হয় এক বৃদ্ধ মহিলার।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এবার অবশ্য রাতের অন্ধকারেও হাতিদের উপর নজরদারি চালানোর জন্য বন বিভাগের তরফে এক বিশেষ ড্রোন আনা হয়েছে।। রাতের অন্ধকারেও হাতিদের স্পষ্ট ছবি পাওয়া যাবে। স্বাভাবিকভাবেই হাতির অবস্থা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারবেন বন বিভাগের কর্মীরা। দিন দিন বাড়ছে হাতি এবং মানুষের সংঘাত। যার অন্যতম একটি কারণ অতি উৎসাহিত মানুষদের বাড়াবাড়ি। তবে এর শেষ কোথায়? বন দফতরের গাফিলতি নাকি জনগণের অতি উৎসাহের কারণে নিরীহ মানুষদের প্রাণ যাচ্ছে? প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।





