দাঁইহাট পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের পুরসভার সদস্য সমর সাহার অভিযোগ, “বিএলও সুজাতা ঘোষালের পরিবার বিজেপি কর্মী হওয়ায় মৃত ভোটারদের নাম তালিকায় রেখে বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে। মৃত ভোটারদের নাম বাদ দিতে বার বার বলা সত্ত্বেও বিএলও নামগুলি বাদ দেয়নি।” ভুতুড়ে ভোটার নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে বিএলও বলেন, “তৃণমূলের সুবিধা বেশি হয়। আমি কোনও রাজনীতির দল দেখে কাজ করিনি।” কাটোয়া দুই ব্লকের বিডিও আসিফ আনসারি ক্যামেরার সামনে কিছু না জানালেও ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন।
advertisement
আরও পড়ুন: ট্রেনের সামনে শুঁড় তুলে হাতি! ১০ মিনিট ধরে হাড়হিম ঘটনা, তারপর কী হল, দেখুন ভিডিও
কেউ পাঁচ বছর আগে মারা গেছেন, আবার কেউ চার বছর আগে মারা গেছেন, কারও আবার তিন বছর আগে মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু মৃত সকলেই নির্বাচনের তালিকায় জীবিত আছেন। একটি বুথে নয় জন মৃত ভোটারের নাম ভোটার লিস্টে জ্বলজ্বল করছে। এরকম অদ্ভুতুড়ে কাণ্ড ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া বিধানসভার দাঁইহাট পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের ১৬৮ নম্বর বুথের বৈরাগ্যপাড়া, শাঁখারি পাড়া, বাজারপাড়া কাছারি পাড়া এলাকায়। বাজারপাড়ার পিয়ালি নাথ পাঁচ বছর আগে মারা গেছে কিন্তু ভোটার তালিকায় দিব্যি বেঁচে আছেন। আবার কাছারিপাড়ার বারীন্দ্রনাথ সান্যাল এবং সুনীল কুমার ঘোষের মৃত্যু হয়েছে যথাক্রমে চার এবং দু’বছর আগে, ভোটার লিস্টে এখনও ওনারা বেঁচে আছেন। সুনীল বাবুর ডেথ সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে স্ত্রী চায়না ঘোষ বলছেন, “আমি বিধবাভাতা পাচ্ছি। কী করে বলি বলুন দেখি তিনি বেঁচে আছেন।”
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে বার বার আবেদন করেও মৃত ভোটারদের নাম বাদ দিতে পারিনি। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রকাশিত ভোটার লিস্টে ১১ জন মৃত ভোটারের নাম পাওয়া যাচ্ছে। তৃণমূলের পুরসভার সদস্য সমর সাহা দাবি করছেন, ১৬৮ নম্বর বুথে বর্তমানে ১৯ জন মৃত ভোটার পাওয়া যাবে।
বিএলও সুজাতা ঘোষাল বলেন, “কিছু নথি না পাওয়ায় মৃত ব্যক্তির নাম ভোটার লিস্ট থেকে বাদ দেওয়া যায় নি। তবে কয়েকজনের মৃত ভোটারের মৃত্যুর শংসাপত্র নিয়ে ৭ নম্বর ফর্ম পূরণ করে আমি বিডিও অফিসে জমা দিয়েছিলাম।” ১৬৮ নম্বর বুথে মৃত ভোটার যে আছে সেকথা মেনে নিয়ে বিএলও বলেন, “গাফিলতি কার বলতে পারব না।” এদিকে বিজেপি দলের কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি সীমা ভট্টাচার্য বলেন, “ভুতুড়ে ভোটার নিয়ে তৃণমূল এতদিন ভোট করিয়ে আসছে। এখন নির্বাচন কমিশনের চাপে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ভুতুড়ে ভোটারদের মৃত ঘোষণা করে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা করে প্রকাশ করে সেটাই এখন দেখার বিষয়।”
