তখন জেলায় একাধিক বাজার, সকাল-সন্ধ্যা দু’বেলা জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কৃষক বাজারে হাজির হতেন উৎপন্ন ফসল নিয়ে। পান চাষ ছিল গ্রামের অধিকাংশ পরিবারে আয়ের প্রধান উৎস। হাওড়া পান বাজার, উলুবেড়িয়া খলিসানি পানবাজার এবং আমতা রোড বাজার। জেলার পানবাজারে অচল অবস্থা, পাঁচলার আমতা রোড পানবাজার বন্ধ।
advertisement
পান চাষ থেকে সরে আসার মূল কারণ, পান পাতার বাজারদর কমে যাওয়া। তার পরেও যে কয়েকজন চাষি কোনওরকমে পান চাষ জিইয়ে রেখেছিলেন সেইটুকুও শেষ হয় আম্ফানে। পাঁচলা ব্লকের দেউলপুর, গঙ্গাধরপুর, জুজারসাহা, শাঁখখালির মতো বিভিন্ন গ্রামে পাঁচ দশ জন করে পান চাষি ছিলেন। আম্ফানে দারুন ক্ষতি হয় পান চাষে। সরকারিভাবে পান চাষিদের সহযোগিতা করা হলেও ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হন প্রকৃত পান চাষিরা।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
একদিকে উৎপন্ন ফসলের দাম কম অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমস্যায় ফেলে কৃষকদের। বর্তমানে এক একটি গ্রামে দুই চার জন কৃষক পান চাষের সঙ্গে যুক্ত। বেশ কিছু গ্রামে এখন আর পান চাষ নেই।
এ প্রসঙ্গে পান চাষিরা জানান, ১৫-২০ বছর আগে যে পান পাতা দু’টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই পাতার দাম বর্তমানে দ্বিগুণ হওয়ার দরকার ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক সেই পান পাতার দাম মাত্র ৭৫ পয়সা।
বর্ষার সময় পানের দাম আরও কম ১০-১৫ পয়সা প্রতি পাতা। বলা যেতে পারে, এক সময় পান চাষের গ্রাম, আগামি কয়েক বছরের মধ্যে পাঁচলা থেকে পান চাষ প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে কৃষক নেতা ফরিদ মোল্লা জানান, এক সময় পাঁচলা তথা হাওড়া জেলার গ্রামীণের বেশ কিছু অংশ পান চাষের জন্য বিখ্যাত ছিল। সে সময় রাজ্যস্তরের পান চাষি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই পাঁচলাতে। কিন্তু বর্তমানে করুন অবস্থা পান চাষিদের। সরকারি অসহযোগিতা অন্যতম কারণ বলেই অভিযোগ। জিনিসের দাম বৃদ্ধি না হওয়া এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রকৃত চাষিরা ক্ষতিপূরণ না পাওয়ার ফলে কৃষকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।