ইতিহাস বলছে, ওডিশার কটক জেলার আটঘর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন বাড়ির আদি পুরুষ কালুমুরারি মোহন দাস মহাপাত্র। তিনি আকবর বাদশাহের রাজকর্মচারী ছিলেন। গৌড়েশ্বর সুলেমন কররানির বিরুদ্ধে যুদ্ধে ওড়িশার রাজা মুকুন্দদেব ও আকবর বাদশাহের সঙ্গে লড়াইয়ে অসাধারণ কৃতিত্ব দেখিয়ে বাদশাহের কাছ থেকে পুরস্কারস্বরূপ পটাশপুর পরগনায় নানকর ভূমি পান। পরে কল্যাণপুরে বাস শুরু করে তিনি পঁচেটের খাঁড়ে নির্মাণ করেন বিশাল রাজগড়। এখান থেকেই উদ্ধার হয় এক শিবলিঙ্গ, পরে বেনারস থেকে আরও কয়েকটি শিবলিঙ্গ আনা হয়। এখানেই তৈরি হয় বিখ্যাত পঞ্চেশ্বর মন্দির।
advertisement
লোককথায় আছে, শ্রীচৈতন্যদেব পুরীযাত্রার সময় এই রাজবাড়ি হয়ে যাওয়ার সময় রাজপরিবার বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষা নেয়। সেই সময় থেকেই রাজপরিবারের কুলদেবতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন কিশোররাই জিউ। তাঁকেই কেন্দ্র করে প্রতি বছর কার্তিক পূর্ণিমা থেকে শুরু হয় এই রাস উৎসব, রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর দশ দিনব্যাপী মেলা বসে।
পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন পাঁচেতগড় রাজবাড়িকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তাই দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটক এখন রাজবাড়ীতে থেকে এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব উপভোগ করতে আসেন। এবছর পর্যটকদের জন্য রাজকীয় পরিবেশে থাকা, প্রাচীন ঐতিহ্যের গল্প শোনা, এবং এলাহী খানাপিনার ব্যবস্থা রয়েছে। তাই আপনার যদি দিঘা ভ্রমণের প্ল্যান থাকে বা শীতের শুরুতে ভ্রমণ করতে চান তাহলে এই রাজবাড়ি হতে পারে আপনার জন্য শ্রেয়। তবে থাকতে চাইলে আগেভাগেই বুকিং করতে হবে। বুকিং সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য পাওয়া যাবে www.panchetgarh.com ওয়েবসাইটে।
এবছর মেলা শুরু হবে ৫ নভেম্বর থেকে এবং চলবে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোকসজ্জা, সার্কাস, টোরাটোরা, ট্রয় ট্রেন ও নানা প্রসাধন সামগ্রীর দোকান।
রাজবাড়ির পক্ষ থেকে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে সংগ্রহশালাও। ৯ নভেম্বর দধি উৎসবের দিন ভোর ৩টা থেকে দুপুর ১১টা পর্যন্ত রাস মঞ্চে অবস্থান করবেন কিশোররাই জিউ। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গোটা মেলা চত্বরে সিসি ক্যামেরা, পর্যাপ্ত পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকের ব্যবস্থা করা হয়েছে।





