এই বৌদ্ধ বিহারের কথা ইতিমধ্যে স্থান পেয়েছে ইতিহাসের বইতে। স্বাভাবিকভাবে একদিকে যেমন ইতিহাস গবেষকদের কাছে অন্যতম ক্ষেত্র তেমনইছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এক অন্যতম ডেস্টিনেশন। বা কেউ সপ্তাহ শেষে কোথাও থেকে ঘুরে আসার প্ল্যান করলে তাদের কাছে এক অন্যতম জায়গা দাঁতনের মোগলমারী বৌদ্ধবিহার। তাই একদিনের ছুটিতে ঘুরে দেখুন এই জায়গা, জানতে পারবেন ইতিহাসের নানা কাহিনী।
advertisement
আরও পড়ুন- যখন তখন ‘বাতকর্ম’ করে ফেলেন? পেটে চাপ আসে গুরগুর করে…? এই ‘ছোট্ট’ জিনিসে চিরতরে মুক্তি!
আরও পড়ুন- চল্লিশেও দেখাবে ‘২৫’! পুতুল-পুতুল ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতে চান? এই ‘জাপানি সিক্রেট’ শুনুন…!
মোগলমারী বর্তমানে একটি অখ্যাত গ্রাম নয়। বিশ্ববাসীর কাছে এক পরিচিত নাম। রয়েছে ইতিহাসের নিদর্শন।ইতিহাস নিয়ে নানান মতের পার্থক্য রয়েছে। বেশ কয়েকজন ইতিহাস গবেষক মনে করেন, রাজা বিক্রমাদিত্যের কন্যা সখীসেনার অধ্যয়নের জায়গা ছিল এটি। সেখান থেকে এই নাম এসেছে বলে মনে করা হয়। মোগলমারির এই প্রত্নক্ষেত্র একটি পাঠশালা বলে মনে করা হয়।
আরও পড়ুন- ভারতের কোন রাজ্যে ‘সবচেয়ে বেশি’ মহিলা মদ্যপান করেন? শুনলেই চমকাবেন…! গ্যারান্টি
অন্যদিকে চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং তার গ্রন্থ সি ইউ কি’ তে বঙ্গদেশের চার রাজ্যের বিশেষ বর্ণনা করেছিলেন- পুন্ড্রবর্ধন, সমতটী, কর্ণসুবর্ণ এবং তাম্রলিপ্ত। এই তাম্রলিপ্ত রাজ্যে ১০টি বৌদ্ধবিহার ও এক-হাজার বৌদ্ধ সন্নাসীর উপস্থিতির কথা উল্লেখ করেছিলেন। এযাবৎকাল পর্যন্ত তাম্রলিপ্ত সন্নিহিত অঞ্চলে কোনও বৌদ্ধবিহার-ই আবিষ্কৃত হয়নি, মোগলমারি ব্যতিত। পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন স্থলের মধ্যে মোগলমারি অন্যতম। যা আজ সখীসেনার পাঠশালার সকল জনশ্রুতির দ্বিধা দ্বন্দ্বকে দূরে সরিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে অবস্থিত অন্যান্য বৃহৎ ও প্রাচীন বৌদ্ধ স্থাপত্যগুলির মধ্যে এটি অন্যতম।
২০০৩-০৪ সাল নাগাদ খননকার্য শুরু হয় দাঁতনের মোগলমারিতে।খননে পাওয়া যায় নকশাযুক্ত ইট, বৌদ্ধ ভিক্ষু বা সন্ন্যাসীদের বাসস্থানের কুঠুরি। পাওয়া যায় ত্রিরথ কাঠামো যুক্ত নকশা, যা দেখে গবেষকদের প্রাথমিক অনুমান স্থানটিতে মন্দির বা গর্ভগৃহ ছিল। গ্রামের অভ্যন্তরে খনন চালিয়ে বেশ কয়েকটি বৌদ্ধস্তূপ ও এক বিশেষ ধরনের মৃৎপাত্র সহ নানা প্রত্ন সামগ্রী পাওয়া যায়।ঢিবির পূর্ব ও পশ্চিম দিকে পাওয়া যায় নকশাযুক্ত ইট দ্বারা সুসজ্জিত দেওয়াল, স্টাকো পলেস্তারা যুক্ত দেওয়াল, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের থাকার কুঠুরি। উদ্ধার হয় খণ্ড বিখণ্ড বুদ্ধের মূর্তিও।এরপর থেকে একের পর এক খননে নানান ইতিহাসের দলিল উদ্ধার হয়।ইতিহাস গবেষকরা জানিয়েছেন এটি ছিল একটি মহাবিহার।
পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে মোগলমারীতে বৌদ্ধ বিহারের সংরক্ষণ ও সাজিয়ে তোলার কাজ হয়েছে। প্রতিদিন বহু পর্যটক আসেন এখানে, ঘুরে দেখে জানেন ইতিহাস। ইতিমধ্যেই দাঁতন বিধানসভার বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধানের ঐকান্তিক উদ্যোগে মোগলমারী বৌদ্ধ বিহারকে সাজিয়ে তোলার জন্য কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।স্বাভাবিকভাবে পর্যটনের নতুন দিশা দাঁতনের এই মোগলমারী বৌদ্ধবিহার।একদিনের জন্যও ঘুরে দেখতে পারেন দাঁতনের এই বৌদ্ধ বিহার।
রঞ্জন চন্দ