আরও পড়ুনঃ রবীন্দ্রনাথই ধ্যান-জ্ঞান! দ্বিতীয় শান্তিনিকেতন গড়ার স্বপ্ন এই যুবকের, দুর্দান্ত তাঁর কর্মকাণ্ড
জঙ্গলমহলের আদিম জনজাতি সম্প্রদায়গুলো বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল। স্থানীয় জমিদারদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় চড়া ভূমি রাজস্ব। যা আদায় করতে গেলে শেষ হয়ে যাবে ভূমিপুত্রদের জঙ্গল। সরব হয়ে উঠল পাইক-বরকন্দাজরা। জঙ্গলের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়ল প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদকে শুরুতেই শেষ করে দিতে পাইকান পেশা বাতিল করা হয় এবং সেই সঙ্গে জমির অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়। এরপর আরও তীব্র হয় প্রতিবাদ। টিলার উপরে মাকড়া পাথর ও পোড়া ইটের রাজপ্রাসাদ হয়ে উঠল বিপ্লবের আঁতুড়ঘর। এখানে রয়েছে দুটি গুপ্ত সুড়ঙ্গ।
advertisement
আরও পড়ুনঃ ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিক ডিজাইনের ছোঁয়া! বেতের আসবাব, সামগ্রীতে সাজিয়ে তুলুন ঘর, রইল সেরা ঠিকানা
মূলত এই কৃষক বিদ্রোহকে ইংরেজরা হেয় করার জন্য নাম দিয়েছিল ‘চুয়াড় বিদ্রোহ’। এর আগেও জগন্নাথ সিংহের নেতৃত্বে হয়েছে বিপ্লব। এবার তা আরও তীব্র। সম্মুখে এসে বিদ্রোহ করলেন রাইপুরের দুর্জন সিংও। নিজেকে ঘোষণা করলেন স্বাধীন তালুকদার হিসেবে। বিপ্লবের জন্য অর্থ ব্যয় করতে করতে বাকি পড়ে তাঁর খাজনা। এদিকে ‘কর’ আদায়ে চাপ দিতে শুরু করে শোষক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
ইংরেজ শাসনের দশসালা বন্দোবস্তের (১৭৯০) সময় রাজা মানগোবিন্দ শিলদার রাজা ছিলেন। মানগোবিন্দের সাতজন রানি ছিলেন। ১৮০৬ সালে রাজার মৃত্যুর পর তাঁর প্রিয় রানি ‘কিশোরমণি’ রাজ সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন। রাজত্ব করেন ১৮০৬ থেকে ১৮৪৮ সাল পর্যন্ত।
কিন্তু রানি কিশোরমণি নিঃসন্তান ছিলেন। তাই তাঁর বিশ্বস্ত দেওয়ানের পুত্র শ্রীনাথ চন্দ্রকে তিনি দত্তক পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে রানির মৃত্যুর পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হিংস্র শাসকের চোখ পড়ল শান্ত জঙ্গলের গর্ভে থাকা এই রাজপ্রাসাদে। রানি নিঃসন্তান হওয়ায় দখল হয় তাঁর সব সম্পত্তি। বহু আন্দোলন ও প্রতিবাদের পর ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে বন্ধ হয় নীল চাষ। এরপর শুরু হয় স্বাধীনতা আন্দোলন। জঙ্গলমহলের আদিবাসীদের মধ্যে কংগ্রেসের উদ্যোগে স্বাধীনতা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।