প্রায় পাঁচ বছরের কঠিন পরিশ্রম এবং গবেষণার পর অম্বিকানগর রাজবাড়িতে এই ছোট্ট সংগ্রহশালা তৈরি হয়েছে। তৎকালীন রাজত্বের ইতিহাস, বংশক্রম, সেই সময়কার ব্যবহৃত বিভিন্ন অস্ত্র, ছোট তোপ ইত্যাদি সংরক্ষণ করে রাখা আছে।
আরও পড়ুন: বিখ্যাত ১০৮ শিবমন্দিরে কেমন হল শিবরাত্রির পুজো? দেখুন ভিডিও
বাংলার এমন গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস জড়িয়ে থাকলেও অনেকেই অম্বিকানগর রাজবাড়ির বিষয়ে জানেন না। বাঁকুড়ায় ঘুরতে এলে একবার মুকুটমণিপুরের কাছে এই রাজবাড়ি থেকে অবশ্যই ঘুরে যান। বাংলার সমৃদ্ধ ইতিহাসের একটা ঝলক দেখতে পাবেন। অম্বিকানগরের তৎকালীন বজ্রকঠিন রাজা রাইচরণ প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী আন্দোলনে। তাঁর উদ্যোগেই অদূরে ছেঁদাপাথর এলাকায় একটি সুড়ঙ্গের মধ্যে গড়ে ওঠে বিপ্লবীদের গোপন ডেরা। সেই ডেরা অস্ত্র তৈরি এবং অস্ত্র প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হত। যাতায়াত ছিল বারীন্দ্রনাথ ঘোষ, প্রফুল্ল চাকি, ভূপেশ দত্তের মত প্রথম সারির বিপ্লবীদের। শোনা যায় যে অম্বিকানগর রাজবাড়ি থেকে প্রতি রাতে রাজা রাইচরণ যেতেন সেই গুপ্ত ডেরায়, বিপ্লবীদের সঙ্গে বৈঠক করতেন।
advertisement
রাজা রাইচরণ নিজে হাতে করে পৌঁছে দিতেন অস্ত্রশস্ত্র এবং রসদ। যদিও গুপ্তচর মারফত রাজার এই সব বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ড জানতে পারে ব্রিটিশ পুলিশ। তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। আলিপুর বোমা মামলায় কিছুদিন কারাবাসের পর প্রমাণের অভাবে মুক্ত হন রাইচরণ। এখনও কিছু তরবারি সংরক্ষণ করে রাখা রয়েছে এই সংগ্রহশালায়।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
পরিবেশটা বেশ মনোরম। মাঠের পাশে দুর্গা মন্দির এবং সেই মন্দির সংলগ্ন রাজবাড়ির ভগ্নাবশেষ। রাজবাড়ি চত্বরেই বসবাস করেন গৌরী শঙ্কর নারায়ণ দেও এবং তাঁর পুত্র। তাঁদের প্রচেষ্টাতেই নিজেদের পরিবারের ইতিহাস নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে সংরক্ষণ করতে পেরেছেন।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী