যে স্মৃতি আজও বহন করে চলেছে শহর মেদিনীপুর। মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠে তিন অত্যাচারী জেলাশাসককে সমাধিস্ত করা হয়। তিন বছরে তিনজন অত্যাচারী জেলাশাসককে হত্যা করেছিলেন মেদিনীপুরের দামাল ছেলেরা। আজ থেকে প্রায় ৯০ বছরেরও বেশি সময়ের আগের সেই ইতিহাস শিহরণ জাগায়।
আরও পড়ুন Health Risk: ‘বাতাসে বিষ’- করোনার মতো প্যাচ ফের দেখা যাচ্ছে ফুসফুসে, সিটি স্ক্যানে ভয়াবহ ছবি
advertisement
সালটা ১৯৩০। জেলা মেদিনীপুর শাসনের জন্য জেলাশাসক হয়ে আসেন পেডি। জেলাশাসক হয়ে আসার পর শুরু করেন অকথ্য অত্যাচার। ভারতীয়দের উপর নির্মম নির্যাতন, শোষণ চালাতেন এই অত্যাচারী জেলাশাসক। হিজলি বন্দি নিবাসে গুলি চালানোর আদেশ দিয়েছিলেন তিনি। তবে এই অত্যাচারী জেলা শাসককে মারার পরিকল্পনা করে বিপ্লবীরা। সেই মত ১৯৩১ সালের এপ্রিল মাসে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালান দুই বিপ্লবী, বিমল দাশগুপ্ত এবং জ্যোতিজীবন ঘোষ। মৃত্যু হয় জেলাশাসক পেডির।
পেডির পর মেদিনীপুরে জেলাশাসকের দায়িত্বে আসেন ডগলাস। তিনিও জেলাশাসক পেডির মতই অত্যাচারী। তবে বিপ্লবীদের করা হুমকিতে কিছুটা সতর্ক হলেও অত্যাচার কমেনি তার। এরপর তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে বিপ্লবীরা। পেডি হত্যার এক বছর পর ১৯৩২ সালের এপ্রিল মাসেই জেলা পরিষদ সভাগৃহে সভা চলাকালীন গুলি করে হত্যা করা হয় ডগলাসকে। গুলি চালিয়েছিলেন বাংলার বাঙালি দুই বিপ্লবী প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য এবং প্রভাংশু পাল। পরপর দু বছরের দুই জেলাশাসকের হত্যাতে ভয় পেয়েছিল ইংরেজরা।
তবে এরপর মেদিনীপুরের দায়িত্বে আসেন বার্জ। ঠিক তার পরের বছর ১৯৩৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মেদিনীপুর কলেজ মাঠে ফুটবল খেলা চলাকালীন উপস্থিত হন জেলাশাসক বার্জ। বার্জকে হত্যা করেন অপর দুই বিপ্লবী অনাথ বন্ধু পাঁজা এবং মৃগেন্দ্রনাথ দত্ত। ৩ বছরের ৩ জেলাশাসকের মৃত্যুর পর মেদিনীপুর শহরে শেখপুরা এলাকায় গির্জার সামনে সমাধিস্থ করা হয় তাদের। কেটে গিয়েছে মৃত্যুর প্রায় ৯০টা বছর। এখনও সেই অত্যাচারের ইতিহাসকে বহন করে চলেছে শহর মেদিনীপুর। আগাছায় থেকে গিয়েছে তাদের সমাধিস্থল। এখানে আসতেন এই তিন ব্রিটিশ শাসকের পরিবারের লোকজন। গবেষকেরা মনে করেন, বিপ্লবীদের সেই অমর গাঁথা স্মৃতি করে রাখুক প্রশাসন। তাদের বীরত্বের নমুনা পরপর তিন জেলাশাসকের সমাধি। তাকে সংরক্ষণ করা উচিত বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।





