তিনি এখনও প্রতিদিন ১০-১২ কেজি কলাইয়ের ডালের বড়ি দেন। ওই বড়ি তাঁর ছেলে ও নাতি পাইকারি দরে দোকানে দোকানে পৌঁছে দেন। বাসন্তী দেবী দুর্গাপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর এলাকার বাসিন্দা।
আরও পড়ুনঃ সাতসকালে ভয়াবহ দুর্ঘটনা মালদহে! ট্রাক ও ডাম্পারের মুখোমুখি সংঘর্ষে পিষে গেলেন ২, পলাতক চালক
advertisement
তিনি এবং তাঁর স্বামী মাখন দাস অর্থিক অনটনের সংসার টানতে বড়ি বিক্রির ব্যবসা শুরু করেছিলেন বাড়িতে। তাঁদের হাতে তৈরি বড়ি বাজারজাত করতেই বেশ ভাল খ্যাতি লাভ করে। বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় তাঁরা বাড়িতে বড়ি তৈরি জন্য মহিলাদের কাজে লাগান। প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ কেজি ডালের বড়ি তৈরি করে বাজারে পাইকারি দরে বিক্রি করতেন। পরবর্তীকালে তাঁদের পুত্রবধূ লিপি দাসও বড়ি তৈরির কাজে হাত লাগান। প্রায় পাঁচ বছর আগে মাখনবাবুর বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হয়। তিনি ৮৫ বছর বয়সেও বড়ি তৈরিতে বাসন্তী দেবীকে সহযোগীতা করে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুনঃ জাইকা প্রকল্পের পাইপলাইনের জলে পাকা ধানে পচন! প্রতিবাদে পথ অবরোধ চাষিদের, ছুটে এলেন আধিকারিকেরা
তাঁর অবর্তমানে স্ত্রী ও বৌমা মিলে ১০-১২ কেজি কলাইয়ের বড়ি বানান। বাজারে চাহিদা বাড়লেও পরিমান বাড়ানোর কোনও উপায় নেই তাঁদের। বার্ধ্যক্যের কারণে বাসন্তী দেবী আর হাতে করে কলাই বাটতে পারেন না। গত ৫ বছর আগে কলাই বাটার মেশিন কিনেছেন তাঁরা। কলাই বেটে হাতে করে বড়ি আজও দেন তাঁরা। ৪০ বছর আগে ২০-৩০ টাকা প্রতি কেজি দরে বড়ি বিক্রি হত। বর্তমানে মুসুর ডালের বড়ি প্রতি কেজি দেড়শো টাকা দরে ও স্পেশাল বড়ি আড়াইশো টাকা দরে বিক্রি করেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
গ্রাম থেকে শহরে আসা ব্যস্ত নগরজীবনে মা-ঠাকুমার মতো ডাল ভিজিয়ে, বেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদ পিঠে মেখে বড়ি দেওয়ার সময় বা জায়গা কোনওটাই নেই এখন। সকাল হলেই স্বামী, স্ত্রী আর সন্তানের ছোট্ট সংসারে তিন জন তিনদিকে। কিন্তু শিকড়ের টান এখনও মনকে নাড়া দেয়। তাই শীত পড়লেই খেজুর গুড়ের মতো কলাইয়ের ডালের বড়ির কথাও মনে পড়ে যায়। আর বাসন্তী দেবীর হাতের তৈরি বড়িতে মা-ঠাকুমার সেই স্বাদ মিলবে শীতের খাবারের নানান পদে। বাজারে আজও তাঁদের বড়ির সুনাম রয়েছে। রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।





