TRENDING:

Handloom Saree: ঐতিহ্যের তাঁত আজ ম্লান, থমকে মেশিনের চাকা! 'সুদিন' ফিরবে কবে? সরকারের মুখ চেয়ে পটাশপুরের তাঁতশিল্পীরা

Last Updated:

তাঁতি পাড়ায় আর শোনা যায় টুংটাং শব্দ। বাজার দখল করেছে সস্তার মেশিনের শাড়ি।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
পটাশপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, মদন মাইতিঃ একটা সময় ছিল, যখন দুর্গা পুজোর আগমনী সুর শুধু ঢাকের আওয়াজে নয়, গ্রামবাংলার তাঁতিপাড়ায় তাঁতের টুংটাং শব্দেও ধ্বনিত হতো। সকাল থেকে রাত অবধি তাঁত মেশিনের চাকা ঘুরত বিরামহীন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুরের চন্দনপুর গ্রামে, পুজোর ঠিক আগে থেকেই তাঁতশিল্পীদের ঘরে থাকত উৎসবের আমেজ। হাতে বোনা শাড়ির গায়ে লাল-সবুজ নকশা যেন গল্প বলত শিল্পীর ভালবাসা, পরিশ্রম আর ঐতিহ্যের। কিন্তু সময় বদলেছে। আধুনিকতার ঢেউ এসে ধাক্কা দিয়েছে এই প্রাচীন শিল্পকে। বাজারে সস্তা মেশিনে তৈরি কাপড়ের দাপটে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে হাতে বোনা তাঁতের কদর।
advertisement

আরও পড়ুনঃ বাস, লরি, টোটোর পরপর ধাক্কা! নন্দীগ্রামে দুর্ঘটনার ভয়াবহ চিত্র, বরাত জোরে বিপুল প্রাণহানি থেকে রক্ষা

একসময়ের গর্ব আজ অনেকটাই ম্লান। এখন দুর্গা পুজোর বাজারে সিল্ক ও সিনথেটিক শাড়ির চাহিদাই বেশি। দ্রুত তৈরি হওয়া, ঝকঝকে ডিজাইন আর তুলনামূলক কম দামের কারণে ক্রেতারা ঝুঁকছেন মেশিনের তৈরি শাড়ির দিকে। ফলে হাতে বোনা শাড়ির জন্য বরাত পাওয়া যেন এখন দুষ্কর হয়ে উঠেছে।

advertisement

পটাশপুরের তাঁতশিল্পী লক্ষ্মীপ্রিয়া মণ্ডল আক্ষেপের সুরে বললেন, “আগে পুজোর আগে দিনরাত তাঁত বুনতাম, হাতে বোনা শাড়ির চাহিদা ছিল অনেক। তখন ঘরে পুজোর আনন্দ থাকত, নতুন জামা আসত, রান্নাঘরে উৎসবের গন্ধ ভাসত। এখন আর সেই সময় নেই। বরাত নেই, কাঁচামালের দাম হু হু করে বাড়ছে। এক একটা শাড়ি বানাতে যত খরচ হয়, বিক্রি করে তাও ওঠে না। তবু এই তাঁত ছাড়তে পারি না। কারণ এই তাঁতই আমার শ্বাস, আমার বেঁচে থাকা।”

advertisement

আরও পড়ুনঃ ডেঙ্গি রোধে ‘অল আউট অভিযান’! এই মাছ খেতে পারে ঘন্টায় ২০০টি মশার লার্ভা, বিরাট পদক্ষেপ পাঁশকুড়ায়

শুধু চাহিদার পতন নয়, কাঁচামালের আকাশছোঁয়া দামও বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুতো, রঙ, নকশার উপকরণ, সব কিছুর দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু বাজারে বিক্রি করার সময় সেই খরচ তুলতে পারেন না শিল্পীরা। ফলে লাভ তো দূরের কথা, অনেক সময় মূলধনও ফেরত আসে না। তাই আগে পুজোয় বাড়িতে আসত নতুন জামা, রান্নাঘর সাজত বিশেষ খাবারে। পরিবারের মুখে থাকত তৃপ্তির হাসি। কিন্তু এখন পুজো এলেও সেই আনন্দ আর নেই। কাজের চাপ নেই, বরাত নেই, আয়ের পথ সংকুচিত। দিনের পর দিন অবহেলা আর অব্যবস্থাপনার শিকার হচ্ছে এই ঐতিহ্যবাহী শিল্প।

advertisement

আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন

তবু কিছু মানুষ এখনও আঁকড়ে ধরে আছেন এই শিল্পকে। তাঁরা বিশ্বাস করেন, যদি সরকারি সহায়তা, প্রশিক্ষণ এবং বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা হয়, তবে আবার ফিরতে পারে সেই সোনালি দিন। তাঁতশিল্প শুধু কাপড় তৈরির ব্যবসা নয়, এটি বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ। একে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব শুধু শিল্পীর নয়, আমাদের সকলের। পুজোর কোলাহলের মধ্যেও হয়তো এই শাড়ি এক মুঠো নীরব গৌরব ফিরিয়ে দিতে পারে। তাঁতি পাড়ার মুখে আবার ফুটিয়ে তুলতে পারে সেই হারানো হাসি।

advertisement

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Handloom Saree: ঐতিহ্যের তাঁত আজ ম্লান, থমকে মেশিনের চাকা! 'সুদিন' ফিরবে কবে? সরকারের মুখ চেয়ে পটাশপুরের তাঁতশিল্পীরা
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল