ভোর ৪টে নাগাদ উটবোঝাই ট্রাক দু’টি রাজস্থানের উদ্দেশে রওনা দেয়। উটবোঝাই ট্রাক দু’টিকে এসকর্ট করে প্রায় দু’হাজার কিলোমিটার পথ নিয়ে যাবে। ট্রাকে সাদা বালির বেড তৈরি করে তার উপর উটগুলিকে চাপানো হয়েছে। জেলা প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর উত্তমকুমার বিশ্বাস বলেন, ”পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের কাছে এ ধরনের অভিজ্ঞতা প্রথম। তার উপর একসঙ্গে এতগুলি উটকে উদ্ধার করে তাদের পাঠানো রীতিমতো কঠিন কাজ। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। সেজন্য কোচবিহার থেকে ‘ক্যামেল হ্যান্ডলার’দের আনা হয়েছিল। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও সহযোগিতা করেছে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছে, সে জন্য উটের ওই ট্রাকের সঙ্গে প্রাণী চিকিৎসকও পাঠানো হয়েছে। সঙ্গে দেওয়া হয়েছে ছোলা, গুড় ও অন্যান্য শুকনো প্রাণীখাদ্য।”
advertisement
উটের ওই কনভয়ের সঙ্গে রয়েছেন সুতাহাটা থানার একজন পুলিস আধিকারিক এবং দু’জন কনস্টেবল। জানা গিয়েছে, উটের জন্য দু’কুইন্টাল ছোলা, ৫০ কেজি আখের গুড় দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৪-৫দিনের যাত্রাপথে ক্যামেল হ্যান্ডলাররা ছোলার সঙ্গে গুড় মাখিয়ে উটকে খাওয়াবে। এ ছাড়াও গাছের পাতাও রয়েছে। গাড়ির ধকলে জখম হলে বা কোথাও আঘাত লাগলে তার শুশ্রূষার জন্য বিভিন্ন ধরনের রিলিফ স্প্রে ও মলম রয়েছে গাড়িতে। সব মিলিয়ে হলদিয়ায় উট উদ্ধার করে স্বভূমিতে পাঠাতে প্রায় ছ’লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে প্রশাসনের।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন পাঁচেক আগে হলদিয়ার সুতাহাটা থানা এলাকায় ১০টি এবং দুর্গাচকে একটি উট উদ্ধার হয়। প্রহিবিশন অফ স্লটার অ্যান্ড রেগুলেশন অব টেম্পোরারি মাইগ্রেশন অর এক্সপোর্ট অ্যাক্ট, ২০১৫ সালের ওই আইনে ওই উটগুলি আটক করা হয়। পরে হলদিয়া মহকুমা আদালতের নির্দেশে দ্রুত উটগুলিকে রাজস্থানে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উটগুলি রাজস্থান পাঠানো হয়েছে বলে জানান হলদিয়ার এসডিপিও অরিন্দম অধিকারী। উটগুলি নিয়ে কার্যত নাজেহাল হয় পুলিশ ও সুতাহাটা প্রাণীসম্পদ দফতর। তবে ওই দফতরের আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে উটগুলি সুস্থ ছিল। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে উট গড়িতে তোলা হয়। উটের সঙ্গে সেলফি তুলতে রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। শনিবার ছুটির দিনেও অফিস থেকে দিনভর জিপিএসের মাধ্যমে উটের যাত্রাপথ তদারকি করেন জেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর।