বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী, বাঙালিকে প্রথম শিখিয়েছিলেন দ্বারকানাথ ঠাকুর। সালটা ১৮৩২। রানিগঞ্জের নারায়ণকুড়ি গ্রামে এখানেই গড়ে তুলেছিলেন দেশের প্রথম কয়লাখনি। রবি ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর আর তাঁরে বন্ধু উইলিয়াম কারের সঙ্গে যৌথভাবে স্থাপন করেন কার অ্যান্ড টেগোর কোম্পানি। নারায়ণকুড়ি গ্রামে আজও দেখা যাবে প্রিন্স দ্বারকানাথের কয়লাকুঠির ভগ্নদশা।
আরও পড়ুন: সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ, কলকাতা জুড়ে বৃষ্টি
advertisement
সম্প্রতি রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এই ঐতিহাসিক নির্দশনকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে। মাত্র একমাস আগেই রাজ্য হেরিটেজ বোর্ড এই তকমা দিয়েছে। আজ ভাঙাচোরা ভাবেই দাঁড়িয়ে আছে দ্বারকানাথের বাংলো। জনশ্রুতি আছে, এই বাংলোতেই এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। বর্তমানে বাংলোর কয়েকটি কঙ্কালসার দেওয়াল সেই বর্ণময় ইতিহাসের বিবর্ণ চিহ্ন বহন করে চলেছে। চারদিকে, ইসিএলের খোলামুখ খনি। যেভাবে গোটা এলাকাকে গ্রাস করেছে কয়লাখনি, তাতে এই ভাঙাচোরা কুঠির অস্তিত্ব আর কতদিন, সন্দেহ স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন: ভারতীয় বিমানবাহিনীর পাইলট হলেন চা বিক্রেতার মেয়ে
নায়ারণকুড়িতে দামোদরের তীরে রয়েছে ঐতিহাসিক জেটি ঘাট। একসময় এখান থেকেই হাওড়ার আমতা-সহ বিভিন্ন জায়গায় কয়লা সরবরাহ হত। নৌকায় করেই কয়লা পাঠানো হত। পরে বাষ্পচালিত জাহাজেও কয়লা সরবরাহ শুরু হয়। নারায়ণকুড়ি গ্রামে আজও দেখা যায় ভারতের প্রথম কয়লাখনির হলেজ ঘর ও কুয়ো আকৃতির কয়লা তোলার সুড়ঙ্গ। প্রবীণদের কথায়, সেই সময় কয়লাখনি থেকে ঘোড়া টেনে নিয়ে আসত কয়লা বোঝাই ডুলি গাড়ি। গ্রামবাসীরাই সযত্নে রক্ষা করে রেখেছেন সেই ঐতিহাসিক ছবি।
স্মৃতি বিজড়িত প্রিন্স দ্বারকানাথের কয়লাকুঠি হেরিটেজ হয়েছে ঠিকই, তবে গ্রামবাসীদের আফসোস, আরও আগে উদ্যোগ নিলে এই ঐতিহাসিক স্থানের অনেক কিছুই বেঁচে থাকত। মুছে যেত না ইতিহাস।