রাজ্য রাইসমিল অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য, গোবিন্দভোগ ও আতপ চালের ওপর ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক বসানোয় ব্যাপক ক্ষতির মুখে শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমান-সহ সমগ্র রাজ্যের আতপ ও গোবিন্দভোগ চাল উৎপাদনকারী রাইস মিল মালিকরা।
পশ্চিমবঙ্গ রাইসমিল অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, ইউরোপীয় এবং সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, কুয়েত, কাতার, ওমান, বাহরাইনের মতো উপকূলীয় দেশে গোবিন্দভোগ চালের বিপুল চাহিদা। কিন্তু ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক বসানোয় আতপ ও গোবিন্দভোগ চাল রপ্তানি করতে গিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে সমস্যায় পড়ছেন রাইসমিল মালিকরা। দামের তারতম্যের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এই চালের জায়গা করে নিচ্ছে অন্যান্য কয়েকটি দেশ। ফলে ভারতের ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তার প্রভাব পড়ছে রাজ্যের চাষিদের উপার্জনেও।
advertisement
আরও পড়ুনঃ 'আদালতে লড়তে লড়তে সব টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে...', নিয়োগ নিয়ে তুমুল উষ্মা প্রকাশ মমতার! রাখলেন বড় আবেদন
এই টানাপোড়েনে সমস্যায় পড়েছেন চাষীরাও। চাষীদের দাবি, রপ্তানি বন্ধ থাকায় একদিকে যেমন রাইস মিলগুলো চাষীদের কাছ থেকে ধান কেনা একপ্রকার বন্ধ করে দিয়েছে। তেমনই আর কয়েক দিনের মধ্যে নতুন ধান উঠতে শুরু করলে দাম আরও কমার সম্ভাবনা বেশি। তখন ধানের খরচ উঠবে কি করে তা ভেবেই চিন্তায় রয়েছেন চাষীরা।
গোবিন্দভোগ চাল পাঁচ বছর আগে ‘জি আই’ তকমা পেয়েছে। গোবিন্দভোগ রপ্তানিকারীদের দাবি, ৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্র সরকার গোবিন্দভোগ চালের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে, অথচ দেশের আরেক সুগন্ধি চাল বাসমতীর ওপর কোনও শুল্ক নেই। মুখ্যমন্ত্রী বাসমতী চালের মতো গোবিন্দভোগ থেকেও শুল্ক তুলে নেওয়ার দাবি করেছেন। প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে ৬-৭ হাজার মেট্রিক টন গোবিন্দভোগ চাল রপ্তানি করা হত। কিন্তু তা বর্তমানে ব্যাহত হচ্ছে। ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক বসানোর পর আর্ন্তজাতিক বাজারে ভারতের গোবিন্দভোগ ও আতপ চালের যে দাম দাড়াচ্ছে তাতে গুনগতমান ভাল হওয়া সত্বেও তা প্রতিযোগীতায় পেরে উঠতে পারছে না। স্বভাবতই ভারতের গোবিন্দভোগ ও আতপ চালের জায়গায় অনান্য কয়েকটি দেশের চাল সেই বাজার দখল করছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে রাজ্যের রাইসমিল গুলিতে।
আরও পড়ুনঃ অরণ্যের অধিকার 'ওদেরই', আদিবাসী উন্নয়নে বিধানসভায় বিরাট ঘোষণা মমতার!
এমতাবস্থায় বাংলার রাইসমিল শিল্প ও কৃষকদের জীবন-জীবিকা বাঁচাতে এ দিকে যেমন রপ্তানিকারী ব্যবসায়ীরা অন্যদিকে বাংলার কৃষকরাও চাইছেন রপ্তানি শুল্ক প্রত্যাহার করুক কেন্দ্র। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
তৃণমূলের রাজ্য সমন্বয় কমিটির মুখপাত্র দেবু টুডু জানিয়েছেন, বিজেপি বাংলা দখল করতে এসেছিল। কিন্তু পারেনি তাই বাংলার ব্যবসায়ীদের বিপদে ফেলে পুঁজিপতি বেনিয়াদের সুযোগ করে দিতেই এই চক্রান্ত করছে বিজেপি। আসলে ওরা চাই না বাংলা সুখে থাকুক তাই বাংলার মানুষকে আহ্বান জানাব এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে।
যদিও বিজেপি বর্ধমান জেলা কমিটির মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তৃণমূলের কাজই হল কেন্দ্রের বিরোধিতা করা, তাই ওরা করছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে থেকে এ সব ঠিক হয়। মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছেন। আশা করি প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি দেখবেন।
Saradindu Ghosh