অদ্ভুত কাণ্ডকারখানার ভুক্তভোগী নিয়ামতপুরের বিষ্ণুবিহারের সেন বাড়ির সদস্যরা। জলভূতের পাল্লায় পড়ে হোম, যজ্ঞ, বাবা ফকির কোনও কিছুই বাদ রাখেননি পরিবারের লোকজন।
শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞান মঞ্চের দারস্থ হলেন নিয়ামতপুরের সেন পরিবারের সদস্যরা। বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা বাড়িতে যাওয়ার পর তাঁদের পরিবারের সদস্যরা জানান, বাড়ির যেখানে খুশি জল পড়ছে। কখনও মেঝেতে, কখনও দেওয়ালে আবার সিলিংয়েও৷ রীতিমত জল ভূত! শুধুমাত্র বাড়ির ওই শিশু কন্যাটি সেই জল পড়া দেখতে পাচ্ছে। বা তার গায়ে জল পড়ছে। বাড়ির গৃহকর্ত্রী জানান, ''প্রথম প্রথম মেয়ের কথা বিশ্বাস করিনি। পরে দেখা গেল আচমকা বাড়ির সমস্ত জায়গা ভিজে যাচ্ছে।''
advertisement
গৃহকর্ত্রী পাড়া প্রতিবেশীদের ডেকে দেখান যে জল পড়ে আছে গোটা বাড়িতে। ভূতের গুজব ছড়াতেই প্রতিবেশীরা জল ভূত দেখতে ভিড় জমান। কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে মোবাইলে ঘোস্ট ডিটেকটর দিয়ে ভূত খুঁজতেও শুরু করে দেন গোটা বাড়িতে। যদিও ওই শিশু কন্যা , যে তার এই বিষয়টি নিয়ে কোথাও কোন ভয় লাগছে না। আবার শিশু কন্যাটি বিভিন্ন সময় অসংলগ্ন কথাও বলছে৷
আরও পড়ুন: হল না শেষরক্ষা, প্রয়াত জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে!
ওই পরিবারের অনুরোধে কুলটির ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের বিজ্ঞান কর্মীরা। বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীদের অনুরোধে এই ঘটনার সাক্ষী থাকতে উপস্থিত ছিল নিউজ ১৮ বাংলা। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ওই বাড়িতে বিজ্ঞানকর্মীরা এবং সাংবাদিকরা থাকলেও কোনও রকমের জল পড়া বা অন্য কোনও অপ্রাকৃতিক ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে, বাড়িতে যখন মেয়েটি একা থাকে তখনই তার সঙ্গে এই ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি বারবার প্রশ্ন করায় মেয়েটির মা-ও শেষে বিরক্ত হয়ে বলেন যে, ''আমার মিডিয়া কভারেজ দরকার নেই। আমি বিষয়টি প্রচার চাই না। অর্থাৎ চেপে ধরতেই বিষয়টি এড়িয়ে যেতে শুরু করেন।''
আরও পড়ুন: অন্তর্বতী জামিন শেষ, জেলে ফেরার আগেই মারাত্মক ঘটনা ছত্রধরের সঙ্গে! ভর্তি হাসপাতালে
বিজ্ঞানকর্মীদের দাবি, রাতে তিনঘণ্টা ওই বাড়িতে থাকলেও কোথাও জল পড়েনি। কারণ শিশুকন্যাটি সবার সামনে ছিল। তাঁদের দাবি, ও একা থাকলেই ওর গায়ে জল পড়ে। অর্থাৎ, কোথাও না কোথাও বিষয়টির মধ্যে কোনও কৌশল কিংবা মিথ্যে বলার প্রবণতা স্পষ্ট হয়েছে। বিজ্ঞান কর্মীরা বলেন, প্রাথমিকভাবে ওই মহিলাকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে শিশুকে ও তাঁকে কাউন্সিলিং করানো উচিত। এর মধ্যে কোথাও কোনও অলৌকিকত্ব, অতিপ্রাকৃত কিছু নেই। ভূতের কোনও অস্তিত্ব নেই।" ভূত তাড়াতে সিসি ক্যামেরা লাগানো প্রস্তাব দেওয়া হয় ওই পরিবারকে।