কারও বাড়িতে বা বাড়ির আশেপাশে সাপের দেখা মিললেই ডাক পড়ে তাঁর। আর খবর মিলতেই টোটো ছুটিয়ে পৌঁছে যান ঘটনাস্থলে। এর পর সাপ উদ্ধার করে সেই সাপকে নিরাপদে ছেড়ে দেন জঙ্গলে। সাপেদের প্রতি এই ভালবাসা থেকেই তিনি নিজের অজান্তেই ধীরে ধীরে পরিচিত হয়ে উঠেছেন ‘সাপ বাপী’ নামে।
পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে বাসিন্দা বাপী সর্দার। পেশায় টোটো চালক তিনি। কিন্তু প্রথম থেকেই সাপেদের প্রতি তাঁর অন্যরকম ভালবাসা। তিনি সকলকে বলেন, সাপ দেখলে ভয় পেয়ে মারবেন না, আমাকে খবর দেবেন, আমি এসে উদ্ধার করে নিয়ে যাব। তাই এলাকায় কোনও ব্যক্তির বাড়িতে সাপ বেরোলেই ডাক পড়ে তাঁর।
advertisement
আরও পড়ুন- ২২৪ রানে অলআউট ভারত, এবার বোলারদের হাতেই সব! ওভালে চাপ বাড়ছে গিলদের উপর
বর্তমানে শুধু ভাতার নয় ভাটাকূল, বলগোনা, আলিনগর, নাসিগ্রাম থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফোন এলেই টোটো নিয়ে তিনি ছুটে যান এক গ্রাম থেকে আর এক গ্রাম। সাধারণ মানুষ যাতে সহজেই তাঁকে চিনতে পারে ও ফোন করে ডাকতে পারে, তার জন্য তিনি টোটোয় সাপ বাপী ও একটি ফোন নম্বর লেখা স্টিকার লাগিয়ে রেখেছেন। তিনি শুধু সাপ ধরে জঙ্গলে ছেড়ে দেন না, কোনও সাপ আহত থাকলে তাকে সুস্থও করে তোলেন।
কিন্তু পারিশ্রমিক? না, সেটা নেন না বাপী সর্দার ওরফে সাপ বাপী। তাঁর কথায়, সাপ ও মানুষ উভয়কেই রক্ষা করি। সাপকে নিরাপদে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার আনন্দই আমার পারিশ্রমিক। তিনি জানান, কিশোর বয়সেই তিনি সাপ ধরার কৌশল রপ্ত করে ফেলেন। তার পর থেকে লোকালয়ে সাপ ঢুকেছে বলে খবর মিলতেই তিনি ছোটেন সাপ উদ্ধার করতে।
সাপ বাপির দাবী, তিনি এখনও পর্যন্ত লোকালয়ে ঢুকে পড়া প্রায় শতাধিক সাপ উদ্ধার করে তাদের নিরাপদ জঙ্গলে মুক্ত করে দিয়েছেন।মুক্ত করার পর জঙ্গলের দিকে নিরাপদে যখন সাপেরা চলে যায় তখন নিজের মনের মধ্য একটা আলাদা রকমের ভাললাগা কাজ করে,আনন্দ লাগে,যা আবার আমাকে নতুন করে কাজ করার অনুপ্রেরণা দেয়।
সায়নি সরকার