বেশ কিছুদিন আগে থেকে পেঁচা ছানার নমুনা পাওয়া যাচ্ছিল ওই স্থানে। কিন্তু একদিন হঠাৎ ছানাগুলি বাসা থেকে নিচে পড়ে যায়। বাগনান এক নম্বর ব্লকের হাটুরিয়া দুই নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুপ্রসুন সামন্ত নিজে একজন সচেতন মানুষ। বাসা হারা ছানাগুলি যাতে অন্য পশু আক্রমণ করতে না পারে, তিনি পাম্প অপারেটর অসীম জানা ও পাম্প মিস্ত্রি সাইফুল ইসলাম সঙ্গে নিয়ে ছানাগুলি নিরাপদ স্থানে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু ছানাগুলিকে কীভাবে সুরক্ষিত রাখা যাবে এবং প্রাণে বাঁচানোর জন্য কি করা যায় ভেবে পাচ্ছিলেন না। এমত অবস্থায় যোগাযোগ করেন বন্যপ্রাণ সংরক্ষণকারী চিত্রক প্রামানিকের সঙ্গে। কিছুক্ষণের মধ্যেই চিত্রক প্রামানিক, সুমন্ত দাস, ইমন ধাড়া ও সুরজিৎ দোয়ারী ঘটনাস্থলে যান এবং ছানাগুলি উদ্ধার করেন।
advertisement
আরও পড়ুন: প্রবেশ হোক বা প্রস্থান! রাজ্যের এই স্টেশনে যাতায়াতে নেই কোন রাস্তা, ভরসা সেই রেললাইন
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
একসঙ্গে চারটি লক্ষ্মী পেঁচার ছানা। যে সমস্ত ছানাগুলি মা ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব প্রায়। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুপ্রসুন সামন্ত’কে বিষয়টি জানাতে তিনিও ছানাগুলিকে মায়ের কাছে রাখার জন্য গ্রামের মানুষ’কে সচেতন করেন। এরপরেই চিত্রক, সুমন্ত, ইমন ও সুরজিৎ জল ট্যাঙ্কের কর্মীদের নিয়ে রীতিমত জীবনঝুঁকি নিয়েই উঁচু জলে ট্যাঙ্কের উপরে ওঠেন। এলাকার ছাত্র সেখ সাহিল ও অন্যান্য রা সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। দীর্ঘক্ষনের চেষ্টায় লক্ষ্মী পেঁচার ছানাগুলি’কে পুনরায় বাসায় রাখা হয় এবং ত্রিপল দিয়ে জল ট্যাঙ্ক ঘিরে দেওয়া হয় যাতে পানীয় জল পরিষ্কার থাকে।
এ প্রসঙ্গে চিত্রক প্রামানিক বলেন, যেকোনও প্রাণীকে এলাকাচ্যুত করলে এলাকার পরিবেশ বা বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ও গ্রামের মানুষ পরিবেশের কথা ভেবে পেঁচাদের নিজের বাসাতেই ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। এটা ভীষণ সদর্থক পদক্ষেপ। লক্ষ্মী পেঁচা প্রতি বছর প্রচুর ইঁদুর, সাপ খেয়ে এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। লক্ষ্মী পেঁচা ধবধবে সাদা হয় না। এদের নিয়ে বহু কুসংস্কার ছড়িয়ে আছে। সেগুলো দূর করতে হবে। শীতের সময় লক্ষ্মী পেঁচাদের প্রজননের সময়। অহেতুক এদের বাসা থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত নয়।
রাকেশ মাইতি





