তবে কি উপাচার্যের এই মন্তব্যগুলির পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে ? নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ এই প্রশ্ন খারিজ না করলেও তিনি কার্যত প্রকারান্তরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের দিকেই আঙ্গুল রেখেছেন। এই প্রসঙ্গে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘‘কেন এই জিনিসটা করছেন আমি ঠিক জানি না। কিন্তু আপনি যে লাইনে কথা বলছেন সেই লাইনটা কি ভাবা যায়! একদম কাউকে চিনি না, হঠাৎ কেন তিনি আক্রমণ করবেন, তাতে আশ্চর্য তো লাগবেই। তবে নিশ্চয় মনে হয়েছে, একটা কিছু ভুল হয়েছে, যেটা উনি শোধরাতে চান, সেটা অবশ্য মনে করাই ভুল।’’
advertisement
এদিন জমি বিতর্ক নিয়েও খোলামেলা প্রশ্নের উত্তর দেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
তিনি বলেন, ‘‘একটা জমি যেটাকে উপাচার্য বিশ্বভারতীর জমি বলে মনে করেন। এটা প্রায় ১০০ বছর আগে আমার বাবা লিজ করেছিলেন। এটা নিয়ে একটা উষ্মা করতে পারেন। নিশ্চয়ই চিন্তার কিছু গলদ আছে। এখানে ওনার মনে হয়েছে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ক্ষেপে যাওয়ার কারণ আছে। উনি ক্ষেপেছেন এটাও তো সঠিক। ঠিক কী কারণে ক্ষেপে গেলেন, সেটা তো গভীর প্রশ্ন।’’ তবে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে উদ্দেশ্য করে বারবার মন্তব্য করছেন যে তিনি জমি দখল করে রেখেছেন ৷ সেই বিষয়েও এদিন প্রশ্নের উত্তর দেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।
এদিন অমর্ত্য সেন এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘‘সে সময় কী দেখেছিলাম, আমার পক্ষে আলোচনা করা কঠিন। ১৯৪৩ সালে শান্তিনিকেতনে আমি স্কুলে পড়ি। এটা ভাবতে গেলে তাহলে নতুন করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়। ‘কব্জা করা’ শব্দটা অনেক সময় সহজে বুঝতে পারি না। সাত বছর বয়স থেকে যে জমি দেখেছি, সেই জমিকে সাত বছর বয়স থেকে কব্জা করে রেখেছি, সেটা বোধগম্য হল না।’’
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে এদিন অমর্ত্য সেন কার্যত বুঝিয়ে দিলেন, যে তিনিও তাঁর সিদ্ধান্তে অনড়। ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বোলপুরেই থাকছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন ৷ তবে আপাতত জমি বিতর্কে যে ইতি আসছে না, তা কার্যত নিশ্চিত।