“ভোট সম্পর্কে কিছুই বুঝি না, তাও কেন আমরাই বারবার টার্গেট হই?” প্রশ্ন করে সে। ভোটে বোমার শিকার হয়ে ২০১৮ সালের ২০ এপ্রিল হাত হারায় তখন মাত্র আট বছরের পৌলমী। সকালবেলায় বাড়ির সামনে ফুল তুলতে গিয়েছিল। সেখানেই গাছের নিচে পড়ে থাকা একটি বোমাকে খেলনার বল ভেবে হাতে তুলে নেয়। নতুন বল পেয়ে খুশিতে ছুটে যায় দাদুর কাছে। দাদু দেখে চমকে ওঠেন, নাতনির হাতে আস্ত একটি তাজা বোমা! ফেলতে বলার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটে যায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ। বাম হাত উড়ে যায় চিরতরে।
advertisement
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনার অভিঘাতে সেদিন কেঁপে উঠেছিল গোটা রাজ্য। ছোট মেয়ে পৌলমী তখন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। এখন সে দশম শ্রেণিতে পড়ে, কিন্তু সেই বিভীষিকা আজও রয়ে গিয়েছে চোখে-মুখে। কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কৃত্রিম হাত লাগানো হয় পৌলমীর। সেই হাত পরে সে ছোটবেলা কাটিয়েছে। কিন্তু শরীর বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এখন আর সেই কৃত্রিম হাত ব্যবহার করতে পারছে না। নতুন কৃত্রিম হাতের খরচ প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা, যা জোগাড় করা এই পরিবারের পক্ষে কার্যত অসম্ভব।
পৌলমীর বাবা নার্ভের রোগে ভুগছেন, কর্মক্ষম নন। মুরগি পালন করেই কোনওরকমে সংসার চালায় পরিবার। তার উপর দুই মেয়ের পড়াশোনার খরচ সব মিলিয়ে আজ তারা চরম আর্থিক সঙ্কটে।” ভোট এলেই আমি আতঙ্কে থাকি। চারপাশে যখন বোমাগুলির খবর শুনি, বুক কেঁপে ওঠে। আমার সঙ্গে যা হয়েছিল, তা যেন আর কোনও শিশুর সঙ্গে না ঘটে”, বলছে পৌলমী। সামনেই রাজ্য বিধানসভা উপনির্বাচন, সম্ভাব্য বসিরহাট লোকসভা ভোটও। চারদিকে যখন ভোটের আগে বোমা, গুলি, হিংসার খবর, তখন পৌলমীর মনে ফের ফিরে আসে সাত বছর আগের সেই এক অভিশপ্ত সকাল।
জুলফিকার মোল্যা