বর্তমানে গুরুতর আহত বিস্ফোরণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু বাগ৷ তাঁকে কটকের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে৷ ওড়িশা পুলিশের নজরদারিতেই সেখানে রয়েছেন ভানু৷ একটু সুস্থ হলেই ট্রানজিট রিমান্ডে ভানুকে এ রাজ্যে আনা হবে বলে সূত্রের খবর৷
আরও পড়ুন: বাম থেকে তৃণমূল, সব জমানাতেই সক্রিয়, মঙ্গলবারের বিস্ফোরণের পরেই ফেরার! কে এই ভানু বাগ?
advertisement
ঘটনায় ভানুর সঙ্গে থাকা তাঁর ছেলে পৃথ্বীজিৎ ও ভাইপোকেও গ্রেফতার করা হয়েছে৷ সূত্রের খবর, বাজির বেআইনি ব্যবসা নিয়ে বনিবনা ছিল না ভানু ও তাঁর ছেলের মধ্যে৷ ছেলে পৃথক বাড়ি করে কীটনাশকের ব্যবসা চালান৷ কিন্তু, বিস্ফোরণের পরে বাবার গুরুতর আহত হওয়ার খবর পেয়েই সে বাবার খোঁজে ওড়িশা যায় ও ভানুর সঙ্গে দেখা করে৷ ভানু অবশ্য বিস্ফোরণের ঘণ্টাখানেক পরেই এলাকা ছেড়ে ওড়িশার দিকে পালিয়েছিল৷ প্রসঙ্গত, খাদিকুল গ্রামটি ওড়িশা সীমান্ত সংলগ্ন একটি গ্রাম৷ গত মঙ্গলবার এখানেই ঘটে বিস্ফোরণ৷
পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুলে অবৈধ বাজি কারখানা বিস্ফোরণের বলি হয়েছেন কমপক্ষে ৯ জন৷ এখনও আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্তত ৭৷ তার মধ্যে ২ দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের নিয়ে আসা হয়েছে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে৷ সেখানেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তাঁরা৷ বিস্ফোরণের পর থেকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু বাগকে৷ গত মঙ্গলবার থেকেই তার তল্লাশিতে নামেন সিআইডি আধিকারিকেরা৷ ওড়িশায় পাঠানো হয় বিশেষ দল৷ ৪ জনকে আটক করে ভানু সম্পর্কে চরলে জিজ্ঞাসাবাদও৷
ভানু বাগ এলাকার পরিচিত তৃণমূল নেতা বলেই স্থানীয় সূত্রের খবর৷ তবে, বাম আমল থেকেই নাকি বারবার একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে এই ভানু বাগের বিরুদ্ধে৷ একাধিক বার করেছেন বাড়ি বদল৷ প্রথমে ১৯৯৫, তারপরে ’৯৮, তারপরে ২০০১৷ একের পর এক বিস্ফোরণ হয়েছে তাঁর অবৈধ বাজি কারখানায়৷ এমনকী, বিস্ফোরণে ভাই বাদল বাগকেও হারাতে হয়েছে তাঁকে৷
কিন্তু, ভাইয়ের মৃত্যুর পরেও বন্ধ হয়নি এই বেআইনি কারবার৷ এলাকাবাসীর দাবি, শুধু বাজিই নয়, রীতিমতো ‘বোমা বানানোর ফ্যাক্টরি’ চালায় এই ভানু৷ এখন নয়, ’৯৫ সালেরও আগে থেকে৷ কিন্তু, এতই নাকি তাঁর প্রতিপত্তি যে, বার বার দুর্ঘটনা, বিস্ফোরণের পরেও বন্ধ করা যায়নি তাঁর কারখানা৷ বার বার বাড়ি বদল হয়েছে মাত্র৷ ২০২২ সালে নাকি গ্রেফতারও হয়েছিলেন এই অভিযুক্ত৷ তারপরে ছাড়াও পেয়ে যান৷
গত মঙ্গলবার সকাল এগারোটা নাগাদ কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু বাগের বাড়িতে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে৷ বিস্ফোরণের জেরে গোটা বাড়িটি উড়ে যায়৷ ওই বাড়ির চারপাশেই ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে পড়েছিলেন মৃত এবং আহতরা৷ পাশের পুকুর থেকে উদ্ধার হয় ঝলসানো দেহ৷