পুজোর কারণে বলি প্রথা আজও বর্তমান। পুজো হয় ষোড়শ উপাচার মেনে। অমাবস্যার রাতে মা’কে অলঙ্কারে সাজিয়ে শুরু হয় পুজো। সূর্য ওঠার আগেই পুজো সমাপন হয় প্রাচীন রীতি মেনে এবং দেবীর বিসর্জন হয়ে যায়। পুজোর রাতে ২১ সের চালের ভোগ না দিলে পুজো সম্পন্ন হয় না। ভোগ রান্নার জন্য ব্যবহৃত হয় কালী পুকুরের জল। ভট্টাচার্য পরিবারের এই পুজোর অপর একটি বৈশিষ্ট্য হল, মায়ের পুজোর ঘটে থাকে পঞ্চপল্লব। ঘটে থাকে আম পাতা সঙ্গে দেবীর অষ্টধাতুর মূর্তি। একবার পুজোয় ব্যয়ভার বহন করতে সক্ষম না হওয়ায় পুজো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই রাতেই দেবীর স্বপ্নাদেশ দেন এবং সে বছরও পুজো হয়। তারপর পুজো বন্ধের কথা ভাবা হয়নি।
advertisement
পরিবারের বর্তমান সদস্য মানিক লাল ভট্টাচার্য জানান, “বর্তমানে পরিবার ভাগ হয়েছে। তিনটি পরিবার মিলে পুজো হয়। পুরনো রীতিনীতি মেনেই পুজো হয়। মায়ের মূর্তি এখানে দক্ষিণা কালী। কিন্তু পুজো হয় তান্ত্রিক মতে রক্ষাকালীর। পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নানা ইতিহাস। পূর্বপুরুষ নারায়ণ ভট্টাচার্য এই পুজো প্রচলন করেছিলেন। তিনি এই এলাকায় টোল চালাতেন। দীপান্বিতা আমাবস্যা তিথিতে কালীপুজো হলেও সারা বছর ধরেই অষ্টধাতুর গড়া দেবীর যন্ত্র পুজো হয়। পুজোর জন্য তাল পাতার পুঁথিতে মন্ত্র লিখে গিয়েছিলেন পূর্বপুরুষেরা সেই মন্ত্রে আজও পূজা হয়।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
পরিবারের সদস্যদের কথায় জানা যায়, ভট্টাচার্য পরিবারের কালীপুজোর জন্য দেবীর মন্দিরে রয়েছে পঞ্চমুণ্ডির আসন। এই পঞ্চমুণ্ডির আসন প্রতিদিন পুজো হয়। তমলুকের ভট্টাচার্য পরিবারের এই প্রাচীন কালীপুজো প্রতিবছর প্রাচীন রীতিনীতি ও নিয়ম নিষ্ঠা মেনে হয়ে আসছে বর্তমানে। পুজো দেখতে সমাগম হয় প্রচুর পরিমাণ ভক্তের। এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল প্রতিমা বিসর্জন। প্রতিমা বিসর্জনের সময় রাস্তার সামনে কেউ থাকে না। প্রতিমা বিসর্জনের পরেই দেবী মাকে দেওয়া ভোগ পরিবারের সদস্য ও অন্যান্যদের দেওয়া হয়। সবমিলিয়ে ভট্টাচার্য পরিবারের প্রাচীন এই কালীপুজো এক ইতিহাসের সাক্ষ্মী।