বর্তমান সময়ে প্রায় সমস্ত কাজেই পুরুষদের সঙ্গে নারীরা সমান পাল্লা দিয়ে চলছে। কর্পোরেট জগৎ থেকে উচ্চ পদস্থ অফিসার এমনকি জেট প্লেন উড়াতে পিছিয়ে নেই মহিলারা। ঘর-সংসার সামলে তারা নিজের ব্যবসাও করেছেন। আর ব্যবসা দিয়েই মোটা টাকা উপার্জন করছেন। প্রত্যন্ত গ্রামের ওই গৃহবধূ সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে প্রচলিত প্রথা ভেঙে ফেলেছেন। নন্দকুমার থানার অন্তর্গত কামারদা গ্রামের বাসিন্দা বীণাপানি সাহু বর্তমানে একজন সফল ব্যবসায়ী।
advertisement
ক্লাস ইলেভেনের পর আর পড়াশোনা হয়নি। বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর ঘরে এসে দেখেন চরম অভাব। তাই সংসার চালাতে স্বামীর পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। স্বামী বাস চালক। নিজে কিছু করার তাগিদ থেকেই সেলাইয়ের কাজ শেখেন। তারপর ইউটিউব থেকে ব্যাগ তৈরি করা শিখে নেন। বাড়িতে প্রশিক্ষণের জন্য পুরানো কাপড় দিয়ে ব্যাগ তৈরি করেন। এরপর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে পাশের গ্রামে এক ব্যাগ কারখানায় কারিগর হিসাবে কাজ শুরু করেন। কিন্তু একটা সময় পর মাথায় ভাবনা আসে নিজেই একটা ছোটখাটো ব্যাগ কারখানা তৈরি করবেন। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। শুরু হল লড়াই।
এ বিষয়ে বীণাপাণি সাহু জানান, “জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে ব্যাগ তৈরি করা শিখি। মূলত সোনার দোকানে, কাপড়ের দোকানে যে ব্যাগ ক্রেতাদের দেওয়া হয় সেই ব্যাগ তৈরি করা হয়। প্রথমে পাশের গ্রামের কারখানায় কারিগর হিসাবে কাজ করি। তারপর নিজেই চিন্তা ভাবনা করি ছোট কারখানা গড়ে তোলার। যে কারখানায় কাজ করতাম সেই কারখানার মালিক এই কাজে সাহায্য করেছেন। কোথা থেকে মালপত্র নিতে হয় তিনিই দেখিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে নিজে কাজ করার পাশাপাশি কারখানায় ২০ থেকে ২৫ জন মহিলা ব্যাগ তৈরি করেন। প্রতিটি ব্যাগ থেকে খরচ বাদে ৩০ শতাংশ লাভ থাকে। আগামী দিনে ইচ্ছে রয়েছে আরও বড় করে কারখানা গড়ে তোলার।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
প্রতিদিন সংসারের কাজ সামলানোর পাশাপাশি কারখানায় এসে ব্যাগ তৈরি করা ও ব্যবসা সামলানোর কাজ করেন বীণাপানি সাহু। স্বামী ও দু’টি ছেলেকে নিয়ে সংসার। সংসারের যাবতীয় কাজের পাশাপাশি ব্যাগ তৈরির ছোট কারখানা গড়ে তুলেছেন তিনি। এর পাশাপাশি দুই মেদিনীপুর, হাওড়া জুড়ে তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কুইজ প্রতিযোগিতার সহকারি সঞ্চালক হিসাবেও কাজ করেন। সংসার চালাতে বীণাপানি সাহুর এই অদম্য লড়াই তাঁকে সফলতার মুকুট পরিয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রামের এই মহিলা প্রমাণ করেছেন ইচ্ছে থাকলেই সফলতা অর্জন করা যায়। পথ দেখিয়েছেন অনেক মহিলাদের।





