যারা অবহেলিত, যাঁরা অর্থের অভাবে নিজেদের শিশুদের যত্ন করতে পারে না। এদের অর্ধেক সময় সময় কাটে ফুটপাথের রেললাইনের ধারে। কেউ কাগজ কুড়িয়ে কেউবা লোকের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালায়। তাদের সামর্থ্য নেই নিজের সন্তানদের মুখে দুমুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার। ওই সব পরিবারে শিক্ষার আলো নিয়ে আসবে কীভাবে! পাশে তো নেই কেউ! পাশে এসে দাঁড়ায় পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার নস্করদিঘী আমরা ছাত্রদল নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। অবহেলিত শিশুদের অভিভাবক হয়ে তাদের পোশাক কিংবা খাওয়ার এমনকি পড়াশোনার দায়ভার তুলে নেয়। সম্পূর্ণ বিনা খরচেই তাদের শিক্ষার আলোয় ফুটিয়ে তোলার কাজ করছে সংস্থাটি।
advertisement
আরও পড়ুন: ১০০ তে ৯৩! স্বাস্থ্য-পরিচ্ছন্নতায় রাজ্যে নজির গড়ল বসিরহাট পৌরসভা, কেন্দ্র দিল বড় স্বীকৃতি
পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার এক নম্বর ওয়ার্ডের বাহারগ্রাম এলাকার ওই ঝুপড়িতে শিশুদের সপ্তাহের একদিন করে পাঠদান শুরু করেন তাঁরা। সেই সঙ্গে তাদের অল্প কিছু খাবার ও পোশাকও দিতেন। কিন্তু পড়াশোনায় মন দিতে পারত না বেশিরভাগ শিশু। গতানুগতিক শিক্ষা পদ্ধতিতে তাদের শেখান যাবে না বুঝে সংগঠনের কর্মীরা সিদ্ধান্ত নেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রকৃতির কোলে খেলার ছলে শিক্ষা দেওয়ার পদ্ধতি অনুসরণ করবেন। পাশে এসে দাঁড়ান হলদিয়ার বাসিন্দা, রবীন্দ্রভারতীর ছাত্রী তথা নৃত্য শিক্ষিকা নবমিতা দাস। এই পথ শিশুদের শিক্ষার আলোয় নিয়ে আসার এক অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
সংগঠনের সদস্য পার্থপ্রতিম পতি বলেন, “সহজ পাঠ প্রথম ভাগের ‘বনে থাকে বাঘ। গাছে থাকে পাখি। জলে থাকে মাছ। ডালে থাকে ফল।’ মুখস্থ করাতে আমরা হিমশিম খেয়ে যেতাম। আজ নাচগানের মাধ্যমে তা সহজেই শিশুরা রপ্ত করতে পেরেছে। ভবিষ্যতে এই পদ্ধতিতেই আমরা পাঠদান করব ওদের।” সহজ পাঠের ছড়ার গানে শিশুদের নাচ শিখিয়ে তাদের শিক্ষা প্রদানের মধ্য দিয়ে উদ্বুদ্ধ করার অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছেন। আর তাতেই একপ্রকার আপ্লুত খুশি ছোট্ট শিশুরা। তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পার্শ্ববর্তী বাসিন্দারাও। অনেকেই আবার বলছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল দিদিমণিদের মতো পড়াশুনা শেখানো হচ্ছে রেল বস্তির ছেলে-মেয়েদের।





