তাইতো বিদেশে থাকলেও, মন পড়ে থাকে মিষ্টি দোকানের এই বিশেষ খাবারের প্রতি। না, কোনও বিশেষ মিষ্টি না। মিষ্টিটি হল কাঠি গজা বা শুটি গজা। পাওয়া যায় বাংলার প্রায় সর্বত্রই। তবুও তমলুকের এই দোকানের কাঠি গজা বিশেষ বিখ্যাত হয়েছে।
advertisement
তমলুক শহরে ‘ব্যথা বুড়োর কাঠি গজা বা শুটি গজা’র’ দোকান কোথায় জিজ্ঞেস করলে যে কেউ দেখিয়ে দেবে। আর পাঁচটা মিষ্টি দোকানের মতই এখানে রসগোল্লা থেকে পান্তুয়া-সহ নানা ধরনের মিষ্টি পাওয়া যায়। তবে এই মিষ্টি দোকান বিখ্যাত হয়েছে শুধুমাত্র শুটি গজা বা কাঠি গজার জন্যই। কারণ এই দোকানের কাঠি গজা এতটাই জনপ্রিয় যে নাম মানুষের মুখে মুখে ঘোরে। কিন্তু দোকানের এ হেন নাম কেন! জানা যায় বর্তমান দোকানের যিনি মালিক আছেন তাঁর বাবা বয়সজনিত কারণে উঠতে বসতে ব্যথা পেতেন। এই কারণে তাঁকে আর পাঁচজন ব্যথা বুড়ো নামে ক্ষেপাত। সেই থেকেই ওই দোকানের নাম হয়েছে ব্যথা বুড়োর দোকান। আর দোকানের কাঠি গজা বিখ্যাত হয়েছে ব্যথা বুড়োর কাঠি গজা নামে।
তমলুকের এই ব্যথা বুড়োর কাঠি গজা দোকান প্রায় ১০০ বছরেরও বেশি প্রাচীণ। দোকান শুরু করেছিলেন বর্তমান যিনি মালিক রবীন্দ্রনাথ সাউ, তাঁর দাদু। এই দোকানে অন্যান্য মিষ্টির পাশাপাশি প্রতিদিনই তৈরি হয় কাঠি গজা। আর দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় ওই কাঠি গজা। প্রতিদিন ১০ কেজি থেকে ১৫ কেজি কাঠি গজা তৈরি হয়। তমলুকে এই কাঠি গজার ক্রেজ এতটাই যে, সবার মুখে মুখে ঘোরে এই দোকানের নাম। আমেরিকার, লণ্ডন, কুয়েত, সৌদি, ওমান-সহ একাধিক দেশে প্রায়ই যাচ্ছে এই দোকানের কাঠি গজা।
দোকানের বর্তমান মালিক রবীন্দ্রনাথ সাউ জানান, ‘তমলুক শহর সহ আশেপাশে বিভিন্ন গ্রামের যারা পড়াশোনা বা চাকরি সূত্রে বিদেশে রয়েছে তারা প্রায়ই কাঠি গজা বিদেশে নিয়ে যান। কখনও কুরিয়ার মারফত। আবার কখনও তারা দেশে এলে একসঙ্গে অনেকটাই করে কাটি গজা যা সঙ্গে নিয়ে যান।’ প্রায় বছরের পর বছর ধরে এই কাঠি গজার স্বাদ একই রয়েছে বলে জানান ক্রেতারা। তাদের দাবি এই দোকানের কাঠি গজার অন্য কোথাও তৈরি কাঠি গজা খেয়ে পাওয়া যায় না। তমলুক শহরের মেছো বাজারের উল্টো দিকে রয়েছে এই ব্যথা বুড়োর কাঠি গজা দোকান।
সৈকত শী