কালীপুজো, দীপাবলিতে মোমবাতি অপরিহার্য। সেই কারণে এই উৎসব উপলক্ষ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়ার রামপুর বিবেকানন্দ মিশন আশ্রমের দৃষ্টিহীনরা এখন রাত দিন এক করে মোমবাতি তৈরির কাজ করে চলেছেন। নিজেদের জীবনে আলোর অস্তিত্ব না থাকলেও, মোমবাতি তৈরির মাধ্যমে আলোর উৎসবে শামিল হওয়ার আনন্দ খুঁজে পান তাঁরা। তাঁদের হাতে বানানো মোমবাতি আলোয় ভরিয়ে দেবে চারপাশ, এটাই যেন তাঁদের কাছে আরও এক বড় পাওয়া। তাই এখন সকাল থেকে রাত অবধি মোমবাতি তৈরিতে ব্যস্ত রামপুর বিবেকানন্দ মিশন আশ্রমের শ্যামল, কার্তিক, মঞ্জু, আশিকরা। জেলাজুড়ে তাঁদের বানানো মোমবাতির চাহিদা ব্যাপক। সেই জন্য দীপাবলির আগে নাওয়াখাওয়া ভুলে মোমবাতি তৈরিতে ব্যস্ত রামপুরের দৃষ্টিহীনরা।
advertisement
আরও পড়ুনঃ দিঘার ঝাউবনে পড়ে ঢিবির মতো ওটা কী…! কাছে যেতেই চমকে উঠল পর্যটকরা, আতঙ্কে কাঁটা সৈকত শহর
দৃষ্টিহীনদের প্রশিক্ষক প্রভাস প্রামাণিক বলেন, “প্রথমে প্যারাফিন ওয়াক্স একটি ডেকচি দিয়ে ২৫০০ ভোল্টে গলানো হয়। এরপর তা বিভিন্ন সাইজের ডাইসে ঢেলে মোমবাতি তৈরি হয়। ওদের প্রথমে আমরা বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিই এবং তারপর ওঁরা নিজেরাই মোমবাতি তৈরি করে। এর বিনিময়ে ওঁরা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে পারে।”
এই বছর এখানে মোট ১১ জন দৃষ্টিহীন ব্যক্তি মোমবাতি তৈরি করছেন। ইতিমধ্যে ১৫০ ব্যাগ অর্থাৎ প্রায় ৭৫ কুইন্টাল মোমবাতি তৈরি করে ফেলেছেন। এই বছর তাঁদের মোমবাতি বানানোর টার্গেট ছিল ৮০ কুইন্টাল। মোমবাতি তৈরি করে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হন দৃষ্টিহীনরা। এই বছর মোট ৭টি সাইজের মোমবাতি তৈরি করা হচ্ছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বিবেকানন্দ মিশন আশ্রমের এই দৃষ্টিহীন শ্যামল, কার্তিক, মঞ্জু, আশিকদের কথায়, তাঁদের হাতের তৈরি মোমবাতি যে আলোর উৎস হতে পারে সেটা ভেবেই উৎফুল্ল হন। নিজেরা আলো দেখতে না পেলেও, সকলের বাড়িতে আলো জ্বালাতে পারছেন সেটাই অনেক বলে জানান তাঁরা। সব মিলিয়ে, রামপুরের এই দৃষ্টিহীন ব্যক্তিরাই যেন আলোর উৎসবে আলোর অন্যতম উৎস।