বড়ির সঙ্গে মেদিনীপুরের মানুষের ভালবাসা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। নবান্ন, বড়দিন বা পৌষমেলার মতোই বাংলার মেয়েদের কাছে শীত এক উৎসবের ঋতু। আর সেই উৎসবের পুরোধা হল গয়না বড়ি। এবার সেই গয়না বড়ি নিয়েই প্রতিযোগিতা মহিষাদলে।
advertisement
সাধারণত পৌষ মাসের শুরুর দিক থেকেই বাড়িতে বাড়িতে লেগে থাকে এই উৎসব। বিউলির ডাল, পোস্ত, সাদা তিল এবং অন্যান্য মশলার সংমিশ্রনের সঙ্গে মেয়েদের সুদক্ষ হাতের কারুকার্যের নিদর্শন হল এই গয়না বড়ি। বছরের পর বছর পেরিয়েও বর্তমান প্রজন্মের রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়েছে সেই কারুকার্যের ছাপ। গয়না বড়ি রীতিমত একটা শিল্পকর্ম। আর পাঁচটা শিল্পকর্মের মতো এই গয়না বড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতা আয়োজন করে বিশ্ব কলাকেন্দ্র নামে একটি সংস্কৃতি সংস্থা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের পাশাপাশি হলদিয়া ও তমলুকের প্রায় ৫০ জন মহিলা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুনঃ অশোকনগরে সরকারি স্কুলের ‘দৃষ্টিকটু’ সাইনবোর্ড! শিক্ষামহলে শোরগোল, সোশ্যাল মিডিয়ায় বাড়ছে ক্ষোভ
গয়না বড়ি প্রতিযোগিতা নিয়ে আয়োজক জানান, “গয়না বড়ি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ঐতিহ্য। চারুকলার একটি নিদর্শন গয়না বড়ি। সাধারণত বাড়ির মহিলারাই গয়না বড়ি তৈরি করেন শীতের দিনে। সেই গয়না বড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। গয়না বড়ি বাংলার লোকশিল্প ও লোকসংস্কৃতির অন্যতম উদাহরণ। মহিষাদল তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ঐতিহ্য গয়না বড়ি আগামী দিনে যাতে জিআই ট্যাগ পায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বিশ্ব কলা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, গহনা বড়ি শুধুমাত্র দেখার জন্য, খাওয়ার জন্য নয়। নন্দলাল বসু গয়না বড়িকে বাংলা মায়ের গয়নার বাক্সের একটি রত্ন বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি গয়না বড়ির উপর একটি বই করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
১৯৫৪ সালে কল্যাণীতে অনুষ্ঠিত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ৫৯’তম অধিবেশনে গয়না বড়ি প্রদর্শিত হয়। বংশপরম্পরায় আজও তমলুক মহিষাদল-সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বাড়ির মা-বোনেরা শীতের সকালে গয়না বড়ি তৈরি করেন। গয়না বড়ির প্রসারের উদ্যোগে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন হল মহিষাদল।





