আর ভারতের আদিবাসী সম্প্রদায়ের শতাব্দী প্রাচীন চদর-বদর পুতুল নাচ তো ছিলই প্রধান আকর্ষণ। দুই দেশের আবেগ, ইতিহাস ও বিশ্বাস যেন এক সুতোয় গাঁথা হয়ে গেল মুহূর্তে। ইন্দোনেশিয়ার পুতুল নাচ দলের প্রধান টনি হারসনো বলেন, “আমি খুবই খুশি। কারণ এই জায়গার এত মানুষ আমাদের অনুষ্ঠান দেখল। বন্ধুর মত এখানকার মানুষ আমাদের স্বাগত জানিয়েছেন। ভারতে এসে আমরা খুবই খুশি।” একটি নাট্য সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মানুষের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেকেই আগে কখনও বিদেশি পুতুল নাচ দেখেননি। তাই ছিল আলাদা উত্তেজনা, আলাদা উচ্ছ্বাস।
advertisement
আরও পড়ুন: কৃষ্ণনগর-আমঘাটা রুটে নতুন দাবি, এবার চাই ‘রোড’ স্টেশন! তৈরি হল কমিটি, চিঠি যাবে রেলের বিভিন্ন দফতরে
সংস্থার তরফে অমিতাভ ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের সংস্থা বহুবছর ধরে পারম্পরিক লোকসংস্কৃতি নিয়ে কাজ করছে দেশ জুড়ে। যাদের পরম্পরা তাদের একটা সরাসরি বাজার পাওয়ার খুব দরকার। আদান-প্রদান খুবই প্রয়োজন তাহলে তাদের সম্মান বাড়ে। আদান-প্রদানের মাধ্যমে শিল্পী, শিল্পের এবং তার গ্রামের সম্মান বাড়ে। এই পারম্পারিক সংস্কৃতির মধ্যেই পুতুল পড়ে। আমি চাই ইন্দোনেশিয়ার পুতুলের সঙ্গে এখানকার চদর বদর একসঙ্গে মিলিত হয়ে কিছু করুক। আমার আশা চাদর বদর হয়তো কোন না কোন দিন বিদেশে যাবে।” চদর-বদর পুতুলনাচের ইতিহাসও কম নয়।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
‘চদর’ মানে চাদর, আর ‘বদর’ বা ‘বাঁধনি’ অর্থাৎ বাঁধা। একটি কাপড়ের ভিতরে তৈরি হয় নাচের কাঠামো। ৭-৮ ইঞ্চি লম্বা পুতুলগুলি বেল, জাম বা শিরিষ কাঠে দক্ষ হাতে তৈরি করা হয়। ধামসা, মাদল, হারমোনিয়ামের সুরে আদিবাসী গান গেয়ে যখন পুতুলগুলি ঘুরে ঘুরে নাচতে থাকে, তখন যেন তাদের জীবন্ত মনে হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই প্রাচীন লোকশিল্প আজ হারিয়ে যাওয়ার মুখে। তবে দুর্গাপুজোর সময় এই চদর-বদর পুতুল নাচ এখনও কিছু জায়গায় দেখা যায়। তবে আউশগ্রামের মানুষ এমন এক মনোমুগ্ধকর সন্ধ্যার সাক্ষী হলেন, যা হয়ত আগামী বহু বছর ধরে মনে রাখার মতো। দুই দেশের সংস্কৃতির এই অনুষ্ঠান শুধু বিনোদন নয়, এ যেন দুই জনগোষ্ঠীর আত্মার সংযোগ।





