শোলাশিল্পী চিরঞ্জিৎ ঘোষ বলেন, “এই সময় আমরা খুবই ব্যস্ত থাকি। রাত দিন জেগে আমাদের কাজ করতে হয়। আর এখন কাজ করতে আমাদেরও ভালই লাগে কারণ অনেকটা বেশি টাকা উপার্জনও হয়।”
advertisement
শিল্পীদের হাতের জাদুতেই সাদা শোলার টুকরো মুহূর্তে রূপ নিচ্ছে অমূল্য শিল্পকর্মে। শাড়ির নকশার মতো নিখুঁত নকশা, গয়নার মতো সূক্ষ্ম কারুকাজ, আর প্রতিমার সৌন্দর্যকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়ার মতো অপূর্ব সাজ, এসবের জন্যই বনকাপাসির নাম আজ দেশজোড়া। এই সময়ের কাজ নিয়েই শিল্পীদের সবচেয়ে বেশি উৎসাহ। কারণ একদিকে আছে আয়ের নিশ্চয়তা, অন্যদিকে আছে তাঁদের প্রতিভার স্বীকৃতি। এবারও বনকাপাসি থেকে শোলার সাজ ছড়িয়ে পড়ছে কলকাতা, দিল্লি, বেঙ্গালুরু-সহ নানা জায়গায়। গ্রামের প্রখ্যাত প্রতিষ্ঠান বলরাম সাজ ভান্ডার ইতিমধ্যেই প্রায় ১৬ লক্ষ টাকার অর্ডার সম্পূর্ণ করেছে।
বেশ কিছু সাজ প্যাকেটবন্দি হয়ে রয়েছে এবং আরও কাজ চলছে। শুধু তাই নয়, গ্রামে আরও বহু প্রতিষ্ঠান ও শিল্পী রয়েছেন, সবার ঘরেই ব্যস্ততা তুঙ্গে। হাজারও কারুকার্য তৈরি হচ্ছে, যা ছড়িয়ে পড়বে দেশ জুড়ে বিভিন্ন পুজোমণ্ডপে। বলরাম সাজ ভান্ডারের কর্ণধার ভূবন গড়াই বলেন, “মুম্বই, গুজরাট, হায়দরাবাদ, অসম-সহ পশ্চিমবঙ্গের সব জায়গাতেই আমাদের তৈরি শোলার সাজ পাড়ি দেবে। এই কাজটা মূলত চার মাসের। এবার আনুমানিক ১৫ থেকে ১৬ লক্ষ টাকার অর্ডার পেয়েছি।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
গ্রামের ওলি-গলিতে এখন অন্যরকম আবহ, রাত বাড়লেও কোথাও নেই ক্লান্তি, বরং আছে আনন্দ আর উচ্ছ্বাস। প্রতিটি বাড়ি থেকেই ভেসে আসছে হাসি, গল্প আর গানের সুর। দুর্গাপুজোর আগমনী হাওয়া যখন বইতে শুরু করেছে, তখন বনকাপাসি গ্রাম যেন আনন্দে মেতে উঠেছে আগেভাগেই। শোলার ঝলকানি, শিল্পীদের হাসি আর আয়োজনে ভরে উঠেছে গোটা গ্রাম। বলা যায়, এ এক অনন্য দৃষ্টান্ত। যেখানে শিল্পই উৎসব, আর উৎসবই জীবন।