এই বিষয়ে কাটোয়া পুরসভার পুরপ্রধান কমলাকান্ত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “চিঠি দিয়ে এবং মিটিং ডেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়ি সম্পূর্ণ করার জন্য বলা হবে। তারপরেও যদি না হয় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষ পর্যন্ত কাটোয়া পুরসভার মোট ২০টি ওয়ার্ডে ২৮৮৪টি বাড়ি নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখনও ৭০টির বেশি বাড়ি বিভিন্ন কারণে অসম্পূর্ণ হয়ে পড়ে আছে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ বারাসাতবাসীর জন্য বড় উপহার! জঞ্জালমুক্ত হবে গোটা শহর, তৈরি হচ্ছে নতুন ডাম্পিং গ্রাউন্ড
সরকারি আবাস প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য উপভোক্তারা ৩ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা অনুদান পান, যা ধাপে ধাপে কয়েকটি কিস্তিতে দেওয়া হয়। অন্য উপভোক্তারা এই অর্থে বাড়ি সম্পূর্ণ করে উঠলেও, যাঁরা কাজ অসম্পূর্ণ রেখেছেন তাঁদের মধ্যে কারও বক্তব্য, “টাকা খুব দ্রুত শেষ হয়ে গিয়েছে, তাই ছাদ ঢালাই করতে পারিনি।” কেউ আবার দোষ দিচ্ছেন শ্রমিকদের। কেউ কেউ কাজ শুরু করার পরেই রাজ্য ছাড়ার কারণও দেখাচ্ছেন।
বাপি কড়ি নামের এক উপভোক্তা বলেন, “যেমন কাজ করেছে, আমি মিস্ত্রিকে তেমন টাকা দিয়েছি। কিন্তু তারপর মিস্ত্রি ডুব মেরেছে। এক বছর মিস্ত্রির বাড়িতে আমি ঘুরেছি কিন্তু সে আসেনি।” সব মিলিয়ে, এই পরিস্থিতিতে পুরসভা কঠোর ভূমিকা নিতে বাধ্য হয়েছে। বহু উপভোক্তাকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে এবং এখনও পর্যন্ত দু’জন উপভোক্তার বিরুদ্ধে কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পুরসভার তরফে স্পষ্ট বার্তা, প্রকল্পের টাকা নিয়ে কাজ না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বিষয়ে কাটোয়া পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বরুণ পাল জানিয়েছেন, “প্রথমে দু’বার নোটিশ করা হবে। তারপরেই এফআইআর। এখনও পর্যন্ত দু’জনকে নোটিশ করা হয়েছে। বিভিন্ন পুরসভার কাছেই একই অর্ডার এসেছে। ৩১ ডিসেম্বর অর্থাৎ এই বছরের শেষে যাদের অসম্পূর্ণ বাড়ি রয়েছে, তাঁদের সম্পূর্ণ করতে হবে।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বহু উপভোক্তা ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কিস্তির টাকা পেয়েও নির্মাণের কাজ শেষ করেননি। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বাড়ির পিলার তুলে কাজ থামিয়ে দিয়েছেন, কেউ ছাদ ঢালাই পর্যন্ত পৌঁছে কাজ অসম্পূর্ণ রেখে চলে গিয়েছেন, কেউ কেউ টাকা পাওয়ার পর কাজের সন্ধানে রাজ্য ছেড়ে দিল্লি বা কেরল পাড়ি দিয়েছেন। এছাড়া স্ত্রী-পরিবার ছেড়ে বেপাত্তা, যোগাযোগও নেই অনেকের। কয়েকজন উপভোক্তার আবার খোঁজ মিলছে না। পুরসভার কর্মকর্তাদের দাবি, প্রকল্পের টাকা হাতে পেলেও বাড়ি নির্মাণে অনেকেই অনীহা দেখাচ্ছেন। এই আচরণে প্রকল্পের উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে। তাই দেরিতে হলেও কঠোর নজরদারি ও নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ জারি করেছে কাটোয়া পুরসভা।





