শুধু এই বার্তা দিয়েই থেমে যাননি তিনি৷ পাশাপাশি কন্যাসন্তান নিয়ে ফ্লেক্স টাঙিয়ে সেই বার্তা দেওয়া হল বিয়েবাড়িতে। তাতে উল্লেখ থাকে, "সন্তান হোক পুত্র বা কন্যা, মাতা কোন ভাবেই দায়ী না"। বিয়ে বাড়ির অন্দরে প্রবেশের পর এইসব চাক্ষুষ করে অতিথিরা কার্যত থমকে দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য হন। তবে তাঁরা পাত্রীর বাবার এমন ভাবনার তারিফ না করেও পারেননি।
advertisement
আরও পড়ুন : সাবধানতা বজায় রেখে অন্তঃসত্ত্বারা কীভাবে দোলের উৎসবে অংশ নেবেন?
পূর্ব বর্ধমানের (East Bardhaman) জামালপুরের (Jamalpur) বাসিন্দা শ্যামাপ্রসাদ দাস। তাঁর শৈশবে তাঁদের পারিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা তেমন ছিল না। কোনও অনুষ্ঠানে উপহার স্বরূপ দামি জিনিস নিয়ে যাওয়া ছিল কঠিন ব্যাপার। এর পর ধীরে ধীরে ফিরেছে অবস্থা। আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হয়েছে পরিবার। তবে অতীতের কষ্ট ভুলে যাননি তাঁরা। সকলের আর্থিক অবস্থার কথা মাথায় রেখেই মেয়ের বিয়েতে উপহার নিষিদ্ধই করে দিলেন শ্যামাপ্রসাদবাবু। কোভিড অতিমারির জেরে দেশের বর্তমান অর্থসামাজিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। সেই বিষয়টির কথাও ভেবে মেয়ের বিয়েতে উপহার সামগ্রী নিয়ে আসার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন : গাঁটের অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পান এই প্রাকৃতিক উপায়ে
একমাত্র কন্যার বিয়ের দিনই কেন বিয়ে বাড়িতে কন্যা সন্তান জন্মানোর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তুলে ধরলেন? এর উত্তরে শ্যামাপ্রসাদ বাবু বলেন, ‘‘বিজ্ঞানভিত্তিক কী কারণে সন্তান পুত্র বা কন্যা হয়ে জন্মায়, তা বহু মানুষ বইয়ে পড়লেও মেনে নিতে চান না। এখনকার যুগেও বহু মানুষ মনে করেন, কন্যা সন্তান জন্মানোর দায় শুধুমাত্র মায়ের।’’ তাই কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য মায়েদেরই নির্যাতন সহ্য করতে হয়। কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার অপরাধে অনেক মায়ের প্রাণ খোয়ানোর মতো ঘটনাও ঘটছে। অথচ বিজ্ঞান বলছে, সন্তান পুত্র হোক বা কন্যা, তার জন্য মাতা কোনওভাবেই দায়ী নয়।’’ অন্ধ ধারণা থেকে মানুষ মুক্ত হতে না পারলে, কোনও বাবা মা তাঁদের মেয়ের বিয়ে দিয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে থাকতে পারবেন না। তাই মেয়ের বিয়েতে বিজ্ঞানের এই পাঠ সর্বসমক্ষে তুলে ধরেছেন বলে তিনি জানান।
( প্রতিবেদন : মালবিকা বিশ্বাস)
