কয়েক মাস আগেই তিনি ফিরেছেন লণ্ডন থেকে। ব্রিটিশ পড়ুয়াদের কাঁথাস্টিচের নকশা শেখাতে গিয়েছিলেন তিনি, যে শিল্প একসময় বাংলার ঘরে ঘরে প্রজন্ম ধরে চলেছে, সেটাই আজ পৌঁছে গেছে টেমস নদীর তীরে। ১০ দিন ধরে চলেছিল সেই কর্মশালা, যেখানে দোভাষীর মাধ্যমে দুই সংস্কৃতির শৈল্পিক সেতুবন্ধন ঘটেছিল। ব্রিটিশ ছাত্রছাত্রীরা মুগ্ধ হয়ে শিখেছেন কাঁথাস্টিচের সূক্ষ্ম কারুকাজ, ছবি তুলেছেন প্রতিটি নকশার।
advertisement
আরও পড়ুন: রেশম শিল্পে মন খারাপ করা ছবি! পরিকল্পনার অভাবে গবাদিপশুদের জন্য বিক্রি করতে হচ্ছে তুঁতপাতা
বুল্টি বেগম বলেন, “আমার মতো এক গ্রামের মেয়ে যে লণ্ডনে গিয়ে ব্রিটিশদের কাঁথাস্টিচ শেখাব, এটা ভাবতেই পারিনি। ওরা অবাক হয়ে গিয়েছিল, এত সূক্ষ্ম কাজ হাতে করা যায় জেনে। এখন আমি গ্রামের মহিলাদের বলি পরিশ্রম করলে স্বপ্নও সত্যি হয়।” ওয়ারিশপুর, বননবগ্রাম, আলেফনগর, বাগরাই, সোমায়পুর, ভেদিয়া এই সব গ্রামে বহু মহিলা বছরের পর বছর ধরে এই শিল্পে যুক্ত। কেউ মা-কাকিমার কাছ থেকে শিখেছেন, কেউ বিয়ের পর নতুন গ্রামে এসে প্রতিবেশীদের দেখে। সংসারের ফাঁকে ছুঁচ-সুতো হাতে নিয়ে তাঁরা বুনছেন শিল্প আর আত্মনির্ভরতার গল্প। আগে মহাজনের কাছ থেকে বরাত পেয়ে কাজ করতেন তাঁরা, এখন অনলাইনেই বিক্রি করেন নিজেদের তৈরি পণ্য। বিশ্ববাংলার শোরুমেও মেলে সেই শিল্পকর্ম। আয়ের উৎস বেড়েছে, বদলেছে গ্রামের অর্থনৈতিক চিত্রও। সম্প্রতি এখানকার কয়েকজন শিল্পী ডেনমার্ক সফর করে এসেছেন, বাংলার কাঁথাস্টিচ পৌঁছে গেছে বিশ্ব দরবারে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বননবগ্রামের এক শিল্পী জানান, “আমাদের এখানে শিউল ফল খুব প্রচলিত, তাই সেই নামেই আমরা নকশার নাম দিয়েছি ‘শিউল কাঁথা’। এখন আমাদের কাজের চাহিদা বিদেশেও বাড়ছে।” তাহমিনা বেগম, রুনা মোল্লা, পূর্ণিমা বিবি, ওহিদা খাতুন ও ফুলবানু শেখের কথায়, “বুল্টি দিদি বিদেশে গিয়ে যেভাবে কাজের মান তুলে ধরেছেন, তাতে আমাদেরও অনুপ্রেরণা মিলছে। এখন আমরা আরও মন দিয়ে কাজ করছি।”






