চর বিষ্ণুপুরের বাসিন্দারা জানান, ১৯৯৬ সালের ভয়াবহ বন্যার পর ভাগীরথীর গতিপথ বদলাতে শুরু করে। তারপর থেকেই চর বিষ্ণুপুর ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে থাকে। ১৯৯৮ সাল থেকে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়ায় একে একে গ্রামের দুর্গা দালান, কালী মন্দির, প্রাথমিক বিদ্যালয়, ক্লাব ঘর, খেলার মাঠ, বহু বসতভিটে ও চাষের জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। যেখানে এক সময় প্রায় হাজারো মানুষের বাস ছিল, আজ সেখানে হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার কোনও মতে টিকে আছে। এখনও চর বিষ্ণুপুরে চার-পাঁচটি ঘরের বাসিন্দা রয়েছেন, যাদের শেষ সম্বল ছিল চাষের জমি, সেটাও এখন নদী গর্ভে চলে যাওয়ার মুখে। চর কবিরাজপুরের বাসিন্দা মনোরঞ্জন সরকার বলেন, “আমাদের রাতে ঘুম হয় না। গ্রামে অর্ধেক লোকের বাড়িঘর ভেঙে গিয়েছে, তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় চলে গিয়েছেন। গ্রামের যা লোক আছে তার অর্ধেক সম্পত্তি নদীগর্ভে। এইভাবে চলতে থাকলে গ্রামই থাকবে না।”
advertisement
আরও পড়ুন: ছিঃ…! চরম পৈশাচিক, নিষ্পাপ অবলা ৭ কুকুরছানার সঙ্গে যা ঘটল, এর চেয়ে লজ্জা আর কী হতে পারে
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙন রোধে যে কাজ করা হয়েছে, তা একেবারেই দায়সারা। যেখানে কার্যকরভাবে বাঁধ নির্মাণ প্রয়োজন ছিল, সেখানে শুধু কয়েকটি বালির বস্তা ফেলে প্রকল্প শেষ দেখানো হয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি, অবিলম্বে ভাঙন রোধের ব্যবস্থা না নিলে, খুব শীঘ্রই গ্রামের আর কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য নিতাইসুন্দর মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগেও ব্যাপকভাবে ভাঙন হয়েছিল কিন্তু আমাদের সরকারের প্রচেষ্টায় সেটা বন্ধ করতে পেরেছি। নতুন করে আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। আমরা সরেজমিনে সবটা দেখে সেচ দফতরে জানিয়েছি।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
গ্রামের মানুষজন আজ যেন শুধু টিকে থাকার লড়াই লড়ছেন। তাদের চোখে ঘুম নেই, মনে শান্তি নেই! আছে শুধু একটাই প্রশ্ন, সকালে ঘরটা থাকবে তো? বর্ষায় আতঙ্ক আরও গ্রাস করেছে তাঁদের। যদিও সম্প্রতি কাটোয়ার এসডিপিওর নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী গ্রামে ঘুরে গ্রামের বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করে এসেছেন।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী