পাশাপাশি জানা যায়, উদ্ধার হয়েছে নির্যাতিতার মোবাইল ফোন। বাকি প্রত্যেক অভিযুক্তের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানান সিপি। তিনি আরও জানান, ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪(২), ৩০৮(২) এবং ৩১৮(২) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ভিক্টিমের গোপন জবানবন্দি ইতিমধ্যেই রেকর্ড করা হয়েছে। কমিশনার বলেন, “আমরা ভিক্টিমের পরিবারের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখছি। প্রশাসন তাঁদের পাশে আছে।”
advertisement
লন্ডনে পড়াশোনা, ক্যানভাসে আঁকেন ছবি! বিহার নির্বাচনে তোলপাড় তুলেছেন… কে এই ‘নতুন চাণক্য’?
ডাক্তারি ছেড়ে IAS অফিসার! এখন ৫১ কোটি টাকার ঘুষকাণ্ডে নাম জড়াল যে কারণে… স্ত্রীও আমলা!
ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার রাতে দুর্গাপুরের এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ সংলগ্ন জঙ্গলে। ওড়িশার বাসিন্দা ২৩ বছর বয়সি মেডিক্যাল পড়ুয়া ওই ছাত্রী জানান, সেদিন রাতে খাবার খেয়ে তিনি নিজের পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে ফিরছিলেন। সেই সময় কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁদের পিছু নেয়। বিপদ আঁচ করে তাঁরা জঙ্গলের দিকে দৌড়ান। নির্যাতিতা জানান, “তিনজন এসে আমাকে ধরে ফেলে, টেনে হিঁচড়ে জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে যায়।” যে মোবাইল ফোন নির্যাতিতার ছিনতাই করা হয়েছিল সেটা উদ্ধার করা হয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। মঙ্গলবার সব অভিযুক্তকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান সিপি।
চিকিৎসকদের কাছে দেওয়া বয়ানে নির্যাতিতা আরও জানান, অভিযুক্তরা তাঁর ফোন কেড়ে নেয় এবং বন্ধুকে ফোন করতে বাধ্য করে। তিনি বলেন, “যখন আমার বন্ধু আসতে রাজি হয়নি, তখন ওরা আমাকে মাটিতে ফেলে দেয়। আমি চিৎকার করলে ওরা ভয় দেখায় যে, আবার আওয়াজ করলে আরও লোক ডেকে এনে নির্যাতন করবে।”
এই ঘটনার পরই পুলিশ অভিযান শুরু করে। পাঁচজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন বেসরকারি হাসপাতালের প্রাক্তন নিরাপত্তারক্ষী, একজন কর্মী এবং স্থানীয় পুরসভার এক অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। এক ধৃত ও নির্যাতিতার সহপাঠীকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে পুলিশ ঘটনার পুনর্গঠন করেছে।
কমিশনার জানান, অভিযুক্তদের পোশাক বাজেয়াপ্ত করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ভিক্টিমের স্টেটমেন্টের ভিত্তিতে আরও প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে চার্জশিট দাখিল করা হবে। কোনও অপরাধী রেহাই পাবে না।”
পুলিশ সূত্রে খবর, বন্ধুর ভূমিকাও তদন্তের আওতায় এসেছে। তাঁর আচরণ ও ঘটনার সময় উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেই কারণেই তাঁকে বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তাঁর পোশাকও পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পর থেকে দুর্গাপুরের মেডিক্যাল কলেজ এলাকা এবং আশপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, “এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল ঘটনা। আমরা চাই ভিক্টিম ও তাঁর পরিবার নিরাপত্তার মধ্যে থাকুন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বর্তমানে নির্যাতিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং পুলিশ প্রশাসন তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্তের তদারকি করছেন কমিশনার নিজে।