পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক থানার অন্তর্গত ধূর্পা গ্রাম। এই গ্রামে দুর্গাপুজো হত না। আশ্বিনের আকাশে যখন কালো মেঘ সরিয়ে নীল সাদা মেঘের ভেলা ভেসে বেড়ায়, প্রকৃতি সেজে ওঠে দেবী দুর্গার আহ্বানে, তখন এই গ্রামে মন খারাপের মেঘ ভিড় করত। চারিদিকে যখন পুজো, পুজো গন্ধ, তখন এই গ্রামে গুরুগম্ভীর পরিবেশ, কোথাও যেন বিষাদের ছোঁয়া! কারণ গ্রামে কোনওদিনই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর আয়োজন হত না।
advertisement
আরও পড়ুনঃ পাখিদের মতোই যেন খাঁচাবন্দি শিশুদের শৈশব! দুর্গাপুজোর থিমে বড় চমক, মিস করবেন না ‘এই’ পুজো
পুজোয় মন খারাপের মেঘ দূর করতে গ্রামের মহিলারা সর্বপ্রথম এগিয়ে আসেন। গ্রামে দুর্গাপুজো শুরু করেন তাঁরা। তাদের এই দুর্গাপুজোর আয়োজনে সাহস জোগায় রাজ্য সরকারের দেওয়া লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। চলতি বছর তমলুক থানার অন্তর্গত ধূর্পা গ্রামের মাতৃশক্তি পুজো কমিটির দুর্গাপুজো তৃতীয় বছরে পদার্পণ করল। শহরের দিকে মেয়েরা দুর্গাপুজোর আয়োজন করলেও গ্রামে মহিলাদের আয়োজিত পুজোর দৃষ্টান্ত খুব কমই পাওয়া যায়। সেই জায়গায় গ্রামের মহিলারা নিজেদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে পুজোর উদ্যোগ নিয়েছেন।
এই বিষয়ে পুজো কমিটির সম্পাদিকা শম্পা জানা বলেন, ‘গ্রামে দুর্গাপুজো হত না। পুজোর আনন্দে সেভাবে মেতে ওঠা হত না। সেই ভাবনা থেকেই গ্রামে দুর্গাপুজোর আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু গ্রামের মেয়েরা সেভাবে স্বাবলম্বী না হওয়ায় দুর্গাপুজো কীভাবে আয়োজন করা হবে সেই নিয়ে চিন্তায় পড়তে হয়। সব চিন্তার অবসান ঘটে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে। গ্রামের মহিলাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের এক মাসের টাকা পুজোর জন্য দেওয়া হয়’।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তমলুকের এই ধূর্পা গ্রামে মাতৃশক্তি পুজো কমিটিতে মোট ১০০ জন মহিলা রয়েছেন। মহিলারা তাঁদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে প্রাপ্ত টাকা থেকে এক মাসের টাকা দুর্গাপুজোর আয়োজনে তুলে দেন। এর পাশাপাশি মহিলারা পাড়ায় পুজোর জন্য চাঁদা আদায় করেন। মহিলারা জানান, তাঁদের এই পুজো আয়োজনে সবচেয়ে বড় সাহস জুগিয়েছে রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। বর্তমানে গ্রামের মহিলাদের পাশাপাশি এই দুর্গাপুজোর আয়োজনে হাত লাগিয়েছেন পুরুষেরাও। লক্ষীর ভাণ্ডারের টাকায় শুরু হওয়া দুর্গাপুজো বর্তমানে গ্রামের বড় উৎসবে পরিণত হয়েছে। আগামীতে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকার পরিমাণ বাড়লে পুজোর আয়োজন আরও বাড়বে বলে জানান মহিলারা।