সীমন্ত পেশায় একজন ঢাকি হলেও সারা বছর তাঁর তেমন নিয়মিত রোজগার থাকে না। ছোটখাটো অনুষ্ঠানে বা গ্রামের মেলায় ঢাক বাজানোর সুযোগ পেলেও তাতে সংসার চলে না। চাষের কাজ বা খণ্ডকালীন শ্রম দিয়ে কোনওরকমে দিন গুজরান করতে হয় তাঁকে। সংসারের টানাপোড়েন, সন্তানের পড়াশোনার খরচ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি- সব মিলিয়ে প্রায় গোটা বছরই তাঁর কষ্টের জীবনযাপন। তবে দুর্গাপুজো এলেই যেন সেই দুঃখ ভুলে যাওয়ার সুযোগ মেলে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ তালের আঁটির উপর কবিগুরুর মুখ! নিমেষে ভাইরাল অর্পিতার হাতের কাজ, না দেখলে বড় মিস
ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত একের পর এক বায়নায় ঢাক বাজিয়ে বেড়ান সীমন্ত। দুর্গোৎসবই তাঁর আয়ের প্রধান সময়। বিভিন্ন মণ্ডপে বাজানোর জন্য আগে থেকেই বায়না পেয়ে যান তিনি। প্রতিটি বায়নায় যা টাকা আসে, সেই দিয়েই বছরের অনেকটা খরচ মেটানোর চেষ্টা করেন।
সীমন্ত বলেন, ‘সারা বছর খুব কষ্টে সংসার চালাতে হয়। কিন্তু পুজো এলে নতুন করে বাঁচার আশা পাই। এই কয়েকদিনের রোজগারই আমাদের ভরসা’। শুধু দুর্গাপুজো নয়, কালীপুজো, লক্ষ্মীপুজো বা গণেশ পুজোর মতো বড় উৎসবেও কিছুটা আয়ের সুযোগ পান সীমন্ত ঘোড়াইয়ের মত ঢাকিরা। তবে সেসব কাজ অল্প দিনের এবং সীমিত আয়ের। তাই দুর্গাপুজোই তাঁদের জীবনের মূল ভরসা। পুজোর ক’টা দিন মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে ঢাক বাজানো শুধু আয় নয়, আনন্দেরও উৎস। ঢাকের তালে ভিড় জমে, মানুষ নেচে ওঠে, সেই আনন্দের অংশীদার হন ঢাকিরাও।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
দুর্গাপুজো বাঙালির কাছে দেবীর আরাধনার উৎসব। আবার একই সঙ্গে এটি বহু পরিবারের জীবিকা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। সীমন্ত ঘোড়াইয়ের মত অসংখ্য ঢাকি সারা বছর এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করেন। দেবীর আগমনে যেমন বাংলার মানুষের মুখে আনন্দের হাসি ফোটে, তেমনই ঢাকিদের সংসারেও জ্বলে ওঠে আশার প্রদীপ। এই কয়েক দিনের উপার্জনই তাঁদের জন্য নতুন ভরসা, নতুন শক্তি। তাই বলা যায়, দুর্গাপুজো শুধু আনন্দের উৎসব নয়, অনেকের জীবনে আশার আলোও বটে।