জানা যায়, চন্দ্র পরিবার মূলত গুজরাট থেকে পূর্ব বর্ধমানে এসেছিল। আদি ব্যবসা ছিল নুনের। সমৃদ্ধ ও সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী এই পরিবার সুদূর গুজরাট থেকে এসে শ্রীবাটির নিরিবিলি পরিবেশকেই স্থায়ী আবাস হিসেবে বেছে নেয়। সেই সময় থেকেই শুরু হয় তাদের দুর্গোৎসব। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম যিনি এই গ্রামে বসতি স্থাপন করেছিলেন তাঁর নাম ছিল কাশীনাথ চন্দ্র। প্রথমবার তালপাতার ঘরে প্রতিমা স্থাপন করে পুজো করা হয়েছিল। ধীরে ধীরে সেই আয়োজন বাড়তে থাকে এবং পুজো ঘিরে সৃষ্টি হয় সমৃদ্ধ পারিবারিক ঐতিহ্য। চন্দ্র পরিবার দীর্ঘকাল ধরে জমিদার শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ছিল।
advertisement
ফলে দুর্গাপুজো কেবল ধর্মীয় আচার ছিল না, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আসর হিসেবেও গুরুত্ব পেত। মহালয়ার পরদিন প্রতিপদ থেকে শুরু হয়ে দশমী পর্যন্ত চলতে থাকে পুজো পর্ব। এখনও পর্যন্ত চালু আছে আখ ও চালকুমড়ো বলির প্রথা। পরিবারের সদস্য সুভাষ চন্দ্র আরও বলেন, ‘পুজোর কয়েকটা দিন আমরা খুব আনন্দের সঙ্গেই দিন কাটায়। আশেপাশের গ্রাম তো বাদই দিলাম, দূর দূরান্তের অনেকেই আসেন আমাদের এই পুজো দেখার জন্য।’
চন্দ্র পরিবারের সদস্যদের মতে, এই পুজো প্রায় ৪০০ থেকে ৪৫০ বছরের পুরোনো। ইতিহাস, ঐতিহ্য আর পারিবারিক সংস্কৃতির উত্তরাধিকার হিসেবে আজও এই দুর্গাপুজো বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে। প্রতিবছর দুর্গোৎসবের সময় শ্রীবাটি গ্রাম মুখরিত হয়ে ওঠে দর্শনার্থীদের ভিড়ে। কালের স্রোতে অনেক কিছু বদলালেও, ছোটবাড়ির দুর্গাপুজো আজও বয়ে নিয়ে চলেছে চারশো বছরের ঐতিহ্য।