দুর্গাপুজো দরজায় কড়া নাড়ছে। হাতে গোনা আর কয়েক সপ্তাহ বাকি। এই সময়ে বসিরহাটের মৃৎশিল্পীদের ঘর-কারখানা ভরে ওঠার কথা কাজের ব্যস্ততায়। নতুন নতুন প্রতিমার বায়নায় নাম-ঠিকানায় ভরে ওঠার কথা খাতা। কিন্তু এই বছর ছবিটা একেবারেই অন্যরকম। প্রতিমা শিল্পীরা আগেভাগেই জানিয়ে দিচ্ছেন, আর নতুন করে কোনও বায়না নেবেন না।
আরও পড়ুন: পরের পর দুর্যোগ, ভেঙে পড়েছেন কৃষকরা
advertisement
কারণ হিসেবে প্রতিমা শিল্পীরা বলছেন, প্রতিবছর যেখানে ১৫-২০টি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করতেন, এবার সেই সংখ্যা কমিয়ে এনেছেন মাত্র ৮-১০ টিতে। কিন্তু তাতেই চিন্তার শেষ নেই। সমস্যার মূল কারণ আবহাওয়ার খামখেয়ালি মেজাজ। লাগাতার বৃষ্টির জেরে শুকোতে পারছে না মাটির তৈরি কাঁচা মূর্তি। রোদ্দুরের দেখা না পেলে মাটি শক্ত হয় না। এদিকে প্রতিমার কাঁচামাটি না শুকালে তার উপর রঙের প্রলেপ দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে সময়মতো প্রতিমা ডেলিভারি দেওয়াই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করেই আর বায়না না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন শিল্পীরা।
এই প্রসঙ্গে এক প্রতিমা শিল্পী বলেন, সারা বছর অপেক্ষা করি এই কয়েকটা মাসের জন্য। পুজোর সময় যা আয় করি, তা দিয়েই সংসার চলে। কিন্তু এবার রোদ্দুরের অভাবে প্রতিমা শুকোচ্ছে না। তাই নতুন বায়না নিলে হয়তো সময়মতো দিতে পারব না। তাতে কু-কথাও শুনতে হবে। ওই সব ঝামেলায় এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এলাকার অন্য শিল্পীরাও একই সুরে কথা বলছেন। তাঁদের দাবি, নতুন অর্ডার নিলে লোকসানের আশঙ্কা আছে। তাই বাধ্য হয়েই আগেভাগে ‘না’ বলে দিচ্ছেন উদ্যোক্তাদের। এখন শিল্পীদের একটাই ভরসা, আবহাওয়ার পরিবর্তন। যদি আগামী কয়েকদিনে রোদ ওঠে, তাহলে অন্তত হাতে থাকা অর্ডারগুলো সময়মতো শেষ করা যাবে। না হলে পুজোর আনন্দের আগে অন্ধকার নেমে আসবে বসিরহাটের প্রতিমা শিল্পীদের ঘরে।