পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বেশ কয়েকটি রাজবাড়ি বা বনেদি বাড়ির পুজো রয়েছে। প্রত্যেকের রয়েছে আলাদা আলাদা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট। সেরকমই একটি পুজো হল মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। প্রায় ২৪৮ বছরে পদার্পণ মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। তৎকালীন রানি জানকী এই পুজোর প্রবর্তন করেছিলেন। ইতিহাস বিজড়িত পুজোকে ঘিরে রয়েছে নানান রূপকথার গল্প। রাজবাড়ির কুলদেবতা যেহেতু মদন গোপাল জিউ। তাই বৈষ্ণব মতে হয় দুর্গাপুজো।
advertisement
আরও পড়ুন: বিরাট সিদ্ধান্ত রেলের, চালু হচ্ছে পুজো স্পেশ্যাল ট্রেন! কোন কোন রুটে, জানুন
আগে সন্ধিপুজোর সময় কামান দেগে এলাকার মানুষজনদের জানান দেওয়া হতো রাজবাড়ির সন্ধিপুজো শুরু হতে চলেছে। এক বছর কামান দাগতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। তারপর থেকে সরকার বাহাদুর কামান দাগা বন্ধ করে। সেই থেকে কামান দাগা বন্ধ। সপ্তমীর দিন ৭ মন, অষ্টমীর দিন ৮ মন, নবমীতে ৯ মন চালের ভোগ চালের ভোগ তৈরি করা হত। তবে বর্তমানে প্রতিদিন তা হয় না। তবে ঠাকুর ভোগের খাওয়া দাওয়া জাঁকজমক রীতি মেনে চলে। ৮ চালায় ঠাকুর টানা টানা চোখ যা অন্যান্য চেয়ে ভিন্ন।
আরও পড়ুন: মহালয়ার দিন ভুলেও এই তিন কাজ করবেন না! জীবনে নেমে আসবে ঘোর অন্ধকার, জানুন জ্যোতিষকথা
১০৮ টি পদ্ম সহযোগে জাঁকজমক ভাবে নিষ্ঠা ভরে পুজো হয় এই রাজবাড়ির পুজোয়। রাজবাড়ির মহিলা সদস্যারা আগে পর্দার আড়ালে থাকতেন। সিঁদুর খেলায় সকলের সঙ্গে অংশ নিতে পারতেন না। এখন তা তুলে দেওয়া হয়েছে সকলের সঙ্গেই সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেন রাজবাড়ীর সদস্যারা। এই দুর্গাপুজোর নিয়ম ছিল রাজ পরিবারের সদস্য সদস্যারা আগে পুষ্পাঞ্জলি দেবেন তারপর এলাকার মানুষজনরা পুষ্পাঞ্জলি দিতেন।
এখন সেটাও তুলে দেওয়া হয়েছে। শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে বিজয়া দশমীর দিন হিজলি টাইটাল খালে বিসর্জন দেওয়া হতো প্রতিমা। এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই রাজবাড়ির দিঘিতে বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমা। পুজোর জৌলুস হারিয়েছে, পুরানো দিনের মতো এখন আর না হলেও ঐতিহ্য মেনে রাজবাড়ির পুজো আজও হয়ে আসছে মহাসমারোহে। পুজোর কটা দিন রাজবাড়ির মা দুর্গার দর্শণ করতে হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমে।
Saikat Shee