এক সময় পাট ব্যবহার করেই তৈরি হতো নানা জিনিস, তবে কালের নিয়মে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগে সেই শিল্প অনেকটাই রুগ্ন হয়ে পড়েছে বর্তমানে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে বহু পাটকল। তাই থিম শিল্পী সন্দীপ মুখোপাধ্যায়ের ভাবনায় এবার রূপ পাচ্ছে মৃতপ্রায় পাট শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার ভাবনা। আর তা থেকেই তাক লাগানো পাটের ব্যাবহার করে গোটা মণ্ডপ সেজে উঠেছে রেল পুকুরপাড় ইউনাইটেড ক্লাবের।
advertisement
আরও পড়ুন: পুজোয় বৃষ্টির আশঙ্কার মেঘ কি কাটল? আবহাওয়া নিয়ে বড় খবর জানুন
পাশাপাশি, শিল্পী তুলে ধরছেন পরিবেশ সচেতনতার বার্তাও। পাট ব্যবহারের মধ্যে দিয়েই যে দূষণমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা যায়, সেদিকেই যেন দিক নির্দেশ করছে এই পুজোর থিম। ইতিমধ্যেই প্রায় ৭৫ শতাংশ শেষ হয়ে গিয়েছে প্যান্ডেল তৈরির কাজ, চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বিশেষ আলোকসজ্জায় মণ্ডপ সাজিয়ে তোলার দায়িত্বে রয়েছেন প্রবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের, প্রতিমাতেও রয়েছে বিশেষ চমক। শিল্পী জানান, গাছের বিভিন্ন অংশকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে মাতৃপ্রতিমা। একটি গাছের শিকড় দেখেই আসে এই অভিনব ভাবনা। শুধু গাছের শিকড়ই নয়, গাছের আঠা থেকে ছাল সব ব্যবহার করেই সৃষ্টি করা হয়েছে এবারের প্রতিমা।
আরও পড়ুন: বন্ধুর অ্যাকাউন্টে ২০০০ টাকা পাঠিয়ে নিজে পেলেন ৭৫৩ কোটি, অদ্ভুত অভাবনীয় কাণ্ড!
সেগুন থেকে চন্দন বিভিন্ন রকম কাঠ দিয়ে, পাশাপাশি প্রতিমায় ব্যবহার করা হয়নি কোনো রকমের কৃত্রিম রং বলেই জানা গিয়েছে। মাতৃ প্রতিমার শাড়ি থেকে গয়না সমস্তটাই গাছের এক একটি অংশ। প্রতিমার আনুমানিক ওজন প্রায় ৫০০ কিলো বলেই মনে করা হচ্ছে। এদিন দৃষ্টিহীনদের হাতেই মায়ের চক্ষুদান করার মধ্যে দিয়ে এক অভিনব বার্তা তুলে ধরা হল পূজো উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দৃষ্টিহীন মানুষদের মধ্যে পুজোর অনুভূতি আরও দৃঢ় ভাবে ছড়িয়ে দিতেই এমন অভিনব উদ্যোগ বলে জানালেন উদ্যোক্তারা।
এই পুজোমন্ডপের প্রতিমা গড়েছেন শিল্পী উৎপল ঘোষ। এদিন চক্ষুদান উপলক্ষে বিশেষ আলতা সিঁদুর পড়ার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে সকল বয়সের মেয়েরা আগমনীর সাজে অংশ নিলেন অনুষ্ঠানে। ক্লাব উদ্যোক্তাদের তরফ থেকে জানা যায়, অষ্টমীতে প্রায় ৫০০০ মানুষের ভোগ খাওয়ারও বন্দোবস্ত করা হচ্ছে এবারের পুজো উপলক্ষে। তবে এদিন দৃষ্টিহীন যুবকদের হাতেই মায়ের চক্ষুদান করে যেন বিশেষ নজর কাড়লো রেলপুকুর ইউনাইটেড ক্লাব। তাই এবারের বিশেষ এই ভাবনা চাক্ষুষ করতে চাইলে, আসতেই হবে বাগুইআটির এই পুজো মন্ডপে।
Rudra Narayan Roy