বর্ধমানের আমাদপুর চৌধুরি বাড়ির পুজো প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো। ঐতিহ্য মেনে ধুমধাম করেই পুজো হয় এই রাজবাড়িতে। পুজো উপলক্ষ্যে চৌধুরি বাড়ির বর্তমান প্রজন্ম আসেন নানা প্রান্ত থেকে। প্রায় দু-সপ্তাহ আগে থেকেই চৌধুরি বাড়ি উৎসব মুখর হয়ে ওঠে। প্রাচীন রীতি মেনেই আমাদপুরের চৌধুরি বাড়িতে বংশ পরম্পরায় পুজো হয়ে আসছে।
আরও পড়ুন- রাশিফল ১৬ সেপ্টেম্বর; দেখে নিন কেমন যাবে আজকের দিন
advertisement
মুঘল সম্রাট শাহজাহানের আমলে মুর্শিদাবাদে জমিদারি পেয়েছিলেন অনাদিরাম। বর্গি হামলার জেরে বর্ধমানের জেলার মেমারির আমাদপুর গ্রামে চলে আসেন অনাদিরামের বংশধর চন্দ্রশেখর চৌধুরী। আসার সময় কুল দেবতাকে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। তৈরি করেন জমিদার বাড়ি।পাশাপাশি, কুল দেবতা মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন চন্দ্রশেখর। আর তখন থেকেই শুরু হয় দুর্গাপুজোও। ধীরে ধীরে গড়ে তোলা হয় দুর্গা দালান। শুরু হয় মহা ধুমধামে দুর্গা পুজো। বংশ পরম্পরায় পুজোর কাজে হাত লাগাচ্ছেন গ্রামের মানুষ।
আরও পড়ুন- আগামী তিন মাস কী ভাবে যত পারেন টাকা করবেন? জেনে নিন রাহুর কৃপায়
পুজোর রীতিনীতি প্রসঙ্গে চৌধুরি বাড়ির সদস্যরা জানালেন, পুজোর রীতিনীতি পরিবারের সদস্যরা পালন করলেও পুজোর সঙ্গে বিশেষভাবে জড়িত থাকেন গ্রামের মানুষ জন। ১৫ দিন আগের থেকেই বোধন হয়। এই জমিদার বাড়িতে বৈষ্ণব মতে পুজো হয়। তাই এখানে শুধু চাল কুমড়ো ও আখ বলি হয়। মহাষষ্ঠীতে বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাল সংগ্রহ করা হয়। চৌধুরি বাড়ির মহিলারা এই চাল সংগ্রহ করে থাকেন। এরপর সেই সংগ্রহ করা চাল বাটা হয়। বাটা চাল দিয়ে আল্পনা আঁকা হয় ঠাকুর দালানে। ঠাকুরের সামনে থাকা প্রতিটি জল চৌকিতেও আলপনা দেওয়া হয় বাড়ির মহিলারাই এই আলপনা দিয়ে থাকেন। সপ্তমীতে লক্ষ্মী পাতা হয়। সেই লক্ষ্মী তোলা হয় দশমীতে। বছরের শুরুর ধান তুলে রাখেন বাড়ির পরিচারকরাই। একটি ঘড়ায় রাখা হয় সেই ধান।
সপ্তমীর দিন দুর্গা দালানের পাশে একটি ঘরে লক্ষ্মীর ঘট প্রতিষ্ঠা করা হয়। মহা অষ্টমীতে মহা নৈবেদ্য সাজানো হয়। তিন থেকে চার ফুট উঁচু হয় সেই নৈবেদ্য। রীতি অনুযায়ী নবমীতে প্রতিদিন চাল কুমড়ো ও আখ বলি দেওয়া হয়। দশমীতে হয় নারায়ন সেবা। এছাড়াও বস্ত্র বিতরণ হয়ে থাকে প্রতি বছর।