বীরভূমের মুরারই ২ ব্লকের অন্তর্গত পাইকর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কাশীমনগর গ্রামটি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। কয়েক হাজার মানুষের বসবাস এই গ্রামজুড়ে। এক সময় সেখানে প্রধান জীবিকা ছিল তাঁতের সুতির গামছা, মশারি তৈরি। গ্রামের বাড়ি থেকে তাঁতের মাকুর খটখট শব্দ শোনা যেত সকাল শুরু হতেই। তবে বর্তমানে বেড়েছে সুতো ও অন্যান্য জিনিসের দাম। যন্ত্রে তৈরি গামছা পাওয়া যাচ্ছে হাতে তৈরি গামছার থেকে অনেক কম দামে। ফলে বিক্রি কমেছে হাতে বোনা সুতির গামছা। এখন বরং লাভ হচ্ছে সুতির থান বুনে।
advertisement
থান প্রস্তুতকারক কাশীমনগর দক্ষিণ মধ্যপাড়ার বাসিন্দা জসিমুদিন শেখ বলেন, আগে ‘গামছা ১ পাট বুনে, চারটে গামছা হত। তাতে পাওয়া যেত ১০ টাকা। এখন সাড়ে ১২ মিটার থান বুনে ৩৩৮ টাকা মজুরি পাওয়া যায়। এটা বুনতে সময় লাগে এক বা দু’দিন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি এক সময় এই তাঁতের সুতির গামছা বুনে ফেরি করেও বিক্রি করে এসেছি গ্রামে গ্রামে। এখন গামছা আর বুনি না। এখন সুতির থান বুনে বহরমপুরে দিয়ে আসি।’
গ্রামের আরও এক বাসিন্দা আবুদার শেখ বলেন, ‘আমার মা আগে বুনতেন গামছা, আমিও নিজের কাজে ফাঁকে হাত লাগাতাম। কিন্তু এখন গামছা বুনে লাভ নেই, ওতে সংসার চলবে না। এখন আমার মা সুতির থান বোনেন, নতুন প্রজন্মের আর কেউ আসবে না এই পেশায়।’ পাইকর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান আনজুড়া বিবি বলেন, ‘যন্ত্রে তৈরি গামছা অনেক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে, ফলে হাতে তৈরি সুতির গামছার কদর কমেছে। সুতোর দাম বেড়েছে, গামছার দাম বাড়ায় বিক্রি হয় না। এখন গ্রামের ৩০ থেকে ৪০টি বাড়ির সদস্য থান বোনেন।’ এমন ভাবেই দিনের পর দিন উপার্জনের রাস্তা খুঁজে পেয়েছেন গ্রামের বাসিন্দারা।





