বাঁকুড়া (Bankura) জেলার অন্যতম মহকুমা শহর খাতড়া। সরকারি ভাবে পুরসভার তকমা না পেলেও জঙ্গলমহলের এই মহকুমা শহরের চেহারা গত ১০০ বছরে বদলে গিয়েছে অনেকটাই। শহর কলেবরে যেমন বহু গুণ বেড়েছে, তেমনই জনসংখ্যাও বেড়েছে কয়েক গুণ। শহরের একপ্রান্তে থাকা শশ্মানে এক সময়ে যেখানে শুধুমাত্র বাউরী সম্প্রদায়ের মানুষেরা মৃতদেহ সৎকার করতেন, এখন সেই শ্মশান প্রায় গোটা খাতড়া শহরের মানুষ সৎকারের কাজে ব্যবহার করেন।
advertisement
আরও পড়ুন- দিওয়ালির জন্য WhatsApp নিয়ে এল নতুন স্টিকার; কীভাবে ডাউনলোড করতে হবে জেনে নিন
কথিত আছে, বাউরী সম্প্রদায়ের মানুষ এই শশ্মানে পর্ণ কুটিরে দেবীর আরাধনা করতেন। এই শশ্মানে জনৈক পুলিশ আধিকারিক তাঁর মায়ের মৃতদেহ সৎকার করতে এলে প্রবল ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। ঝড় বৃষ্টিতে মাথা গোঁজার ঠাই খুঁজে পাননি ওই পুলিশ আধিকারিক। মূলত তাঁর উদ্যোগেই ওই স্থায়ী শশ্মান কালী মন্দির গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ীর উদ্যোগে কোড়ো পাহাড়ের চূড়ায় থাকা দেবী পার্বতীর মন্দিরের আদলে মার্বেল পাথরে মোড়া সুদৃশ্য কালী মন্দির স্থাপিত হয়। এই কালী মন্দিরের প্রায় পঁয়ত্রিশ বিঘে জায়গার উপর একে একে গড়ে ওঠে শিব মন্দির, রামকৃষ্ণ, সারদা ও বিবেকানন্দের মন্দির, রন্ধনশালা, প্রসাদ গ্রহণের জায়গা।
আরও পড়ুন- ভ্যাকসিনের দুই ডোজ নেওয়া থাকলেও কালীপুজোর মণ্ডপে বিধিনিষেধ, নির্দেশ দিল হাইকোর্ট
জাঁক জমক ও আলোকসজ্জায় খাতড়া শহরের অন্যান্য বারোয়ারি মণ্ডপগুলিকে সমানে সমানে টেক্কা দেয় শশ্মান কালীর পুজো। কালী পুজোর দিন খাতড়া মহকুমার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেবী দর্শনে কয়েক হাজার মানুষ হাজির হন শশ্মান কালী মন্দিরে। পরের দিন মন্দির চত্বরে প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ প্রসাদ গ্রহণ করেন। তবে শুধু পুজোর সময়ে নয়। সারা বছরই পার্শ্ববর্তী মুকুটমণিপুরে যারা বেড়াতে আসেন তাঁদের অনেকেই দেবীর মাহাত্ম শুনে চলে আসেন এই শ্মশান কালী মন্দিরে। স্থানীয়দের দাবি খাতড়া শ্মশান কালী অত্যন্ত জাগ্রত। মন ভরে দেবীর কাছে প্রার্থনা করলে দেবী কোনও ব্যাক্তিকেই খালি হাতে ফিরিয়ে দেন না।
মৃত্যুঞ্জয় দাস