উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট থেকে সুন্দরবনের—বিভিন্ন জায়গায় গ্রাম্য এলাকায় দেখা যায় লেপ-তোষক তৈরির দৃশ্য। তুলো স্তূপ করে তার ওপর চ্যাপ্টা কাঠের পাটাতন দিয়ে ধুনতে ধুনতে কারিগরের হাতের ছন্দে উড়ে বেড়ায় তুলোর নরম রোঁয়া। পরে সেই তুলো ঢোকানো হয় নানা রঙের কাপড়ে তৈরি কভারের ভেতর। তারপর শুরু হয় সূক্ষ্ম সুঁই-সুতোর কাজ, যাতে বাঁধা পড়ে নরম তুলো আর তৈরি হয় একেকটি লেপ-তোষক—অতি পরিচিত বাঙালির শীতের সঙ্গী।
advertisement
একসময় বাড়ির ছাদ বা উঠোন জুড়ে লাল খোপকাটা কাপড়, তুলোর বস্তা আর ধুনার লাঠি দেখলেই বোঝা যেত শীতের পদচারণা। কিন্তু সেই দৃশ্যও এখন বিরল। ভিন জেলা বা রাজ্য থেকে আসা ক’জন ধুনুরির। কিন্তু তাদের কণ্ঠেও আজ হতাশার সুর। আধুনিক কম্বল, সস্তা ব্ল্যাঙ্কেট আর মেশিনে তৈরি ম্যাট্রেসের ঝড়ে লেপ তৈরির কাজ যেন টিকে থাকার লড়াইয়ে হাঁপিয়ে উঠেছে।
তবু সবশেষে একটা জিনিস আজও অটল—বাঙালির মন। যত আধুনিক কম্বলই বাজার মাত করুক না কেন, শীতের সকালে তুলোর লেপ মুড়ে না শুলে অনেকেরই যেন শীতের আসল আমেজ আসে না! সেই স্মৃতি, সেই নরম উষ্ণতার টানেই হাতে গোনা কিছু মানুষ আজও লেপ বানাতে দেন।





