এবারেও পেটের টানে ভিন্ন রাজ্যে পাড়ি দেবেন তাঁরা। কিন্তু ভিন রাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকের নির্যাতনের ঘটনা কিছুটা উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠায় রেখেছে তাঁদের। ঢাকের বোলে জীবন চলে। কথাটা ঢাকিদের কাছে অক্ষরে অক্ষরে সত্যি। ঢাকিরা মুখিয়ে থাকেন, উৎসব কবে শুরু হবে, কবে হাতে লক্ষ্মী আসবে। কারণ ঢাকের বোল ফুটলে তাঁদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ভরে ওঠে। পাশাপাশি, সারা বছরের অর্থের খরা দূর হয়ে রোজগারে জোয়ার আসে। পরিবার, স্বজনকে ছেড়ে লক্ষ্মী লাভের আশায় ভিন রাজ্যে পাড়ি দেন ঢাকিরা।
advertisement
আরও পড়ুন : লাল ও খয়েরির মিশেলে সামুদ্রিক নকশার জাদু, সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল থিম এবার জীবন্ত! ব্যাংককের মন্দির ঘরের কাছে
পরিবারের মুখে দু’মুঠো খাওয়ার তুলে দিতে পুজোর পাঁচটা দিন পরিবারের লোকদের ফেলে পাড়ি দিতে হবে ভিন রাজ্যে। এমন পরিস্থিতি অধিকাংশ ঢাকিদের পরিবার উদ্বিগ্ন। যতই বাধা বিপত্তি আসুক, পরিবারের কথা ভেবে মণ্ডপে যেতে হবে তাঁদের। কারণ পেট বড় বালাই। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুকের কেলোমাল এলাকার ঢাকিরা কেউ জেলার মধ্যে, কেউ বা রাজ্যের মধ্যে, আবার কেউ মুম্বাই, গুজরাট, আহমেদাবাদ, ব্যাঙ্গালোর সহ নেপাল ও ভুটানে দুর্গাপুজোয় ঢাক বাজাতে যান। বাড়তি রোজগারের আশায় ঘর সংসার ফেলে দুর্গাপুজোয় ঢাক বাজাতে বাইরে যায় ঢাকিরা। কারণ বাইরে ঢাক বাজাতে গেলে আয় হয় বেশি।
আরও পড়ুন : নিছক খেলনা নয়, এক জীবন্ত শিল্প! ২২ খণ্ডে লুকিয়ে আছে ‘তালপাতার সেপাই’য়ের অদ্ভুত রহস্য, যোগ আছে ঠাকুরবাড়ির
এ বিষয়ে ঢাক বাদ্যকার শ্যামল বারিক জানান, ‘ভিন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের নিপীড়নের কথা শুনছি সংবাদ মাধ্যমে। তাই চিন্তা তো রয়েছে, উদ্বিগ্ন পরিবার-পরিজন। কিন্তু বাইরে না গেলে সংসার চলবে না। তাই ঢাক নিয়ে ভিন রাজ্যে যেতে হবে।’ বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো, দোরগোড়ায়। যদিও প্রকৃতি এখন বিরূপ মনা শরতের নীল আকাশ কালো মেঘে ঢাকা।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তবুও রাস্তার পাশে কাশফুল আগমনীর বার্তা দিচ্ছে। শরতের প্রকৃতি যেমনই হোক না কেন, উৎসবের মেজাজ বাংলা জুড়ে। বাঙালির এই শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো ঢাকের আওয়াজ ছাড়া সম্ভব না। দুর্গাপুজো এলেই খুশির বার্তা আসে ঢাকিপাড়ায়। ভিন রাজ্য সহ নেপাল, ভুটান থেকে পুজোয় ঢাক বাজানোর জন্য ডাক পেয়েছেন। ফলে এক বছর আগে তুলে রাখা ঢাক নামিয়ে উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠের মধ্য দিয়েও আবারও প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন ঢাকিরা।