দীর্ঘ সাত ঘন্টা দেহ শ্মশানে পরে থেকেও হল না সৎকার। আর তার জেরেই উঠছে প্রশ্ন। ঘটনাটি ঘটেছে নিউ ব্যারাকপুর এলাকায়। জানা যায়, গত কয়েকদিন আগে স্থানীয় কয়েকজন পরিচিতদের সঙ্গে গৌহাটি কামরূপ কামাক্ষায় ঘুরতে যান বছর ৫৮-র নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা পারুল সিকদার। সেখানে গিয়ে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
আরও পড়ুন- বয়সকে তুড়ি মেরে এই মানুষটি যা করছেন, শুনলে অবাক হয়ে যাবেন
advertisement
কোনওরকমে কামাক্ষা মন্দিরে পুজো দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে গৌহাটি স্টেশনে এসে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন পারুল দেবী। পরদিন সকালে তিনি নিউ ব্যারাকপুরে ফোন করে জামাই সমর সরকারকে বলেন, শরীর ভাল নেই, ডাক্তার দেখাবেন।
এর পরই আবার আসে ফোন। ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে জানানো হয়, পারুল সিকদার মারা গিয়েছেন। যেহেতু ঘটনাটি ঘটেছে স্টেশনে, তাই গোটা বিষয়টি GRP-র অধীনে চলে যায়।
GRP জানায় মৃতদেহ নিতে পরিবারের তরফ থেকে আসতে হবে। সেই মতো সমরবাবু একদিন পরেই গিয়ে পৌঁছন। সেখানে GRP র সাথে দেখা করে সমর বাবু জানতে পারেন, মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। অবশেষে ৪২ হাজার টাকা ব্যয় করে গাড়িভাড়া করে ২৭ তারিখ দুপুরে নিউব্যারাকপুরে এসে পৌঁছয় মৃতদেহ।
আরও পড়ুন- পালিত হল ইসকন মায়াপুরে রথ-যাত্রা! উল্টোরথে দেশ বিদেশের ভক্তদের ঢল
এর পর পুরসভার পৌরপ্রধানের সহযোগিতায় মৃত দেহ সৎকারের জন্য সাঝিরহাট শ্মশনে নিয়ে গেলে শ্মশান কর্তৃপক্ষ জানায়, এই মৃতদেহ যেহেতু ময়নাতদন্ত হয়েছে, সেক্ষেত্রে পুলিশের তরফে ডেথ সার্টিফিকেট না হলে দাহ করা যাবে না।
সাঝিরহাট শ্মশান থেকে খবর যায় মধ্যমগ্রাম থানায়। ছুটে আসে পুলিশ, মৃতের জামাই গৌহাটি GRP র দেওয়া কাগজ দেখালে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, এই সকল কাগজ গৌহাটি GRP কে ই -মেইল এর মাধ্যমে নিউ ব্যারাকপুর থানাকে পাঠাতে হবে। তার পরই নিউ ব্যারাকপুর থানা ডেথ সার্টিফিকেট দিতে পারবে।
সেইমতো গৌহাটিতে যোগাযোগ করা হলেও তারা জানায়, whats app এর মাধ্যমে নথি পাঠালেও ই-মেইল করা সম্ভব হচ্ছে না। whatsapp এ পাঠানো নথি আবার নিউ ব্যারাকপুর থানা গ্রহণ করতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। এসবের চক্করে টানা সাত ঘন্টা শ্মশানেই পরে রইল দেহ।
শেষে নিউ বারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান-এর হস্তক্ষেপে দেহ পুরসভার পিস হেভেন রাখা হয়। তবে একদিকে যেমন প্রশ্ন উঠছে গৌহাটি GRP ভূমিকা নিয়ে, তেমনই রাজ্য পুলিশের নিয়মের বেরাজালে অসহযোগিতার বিষয়টিও উঠে আসছে।
বাড়ির লোক না থাকলে কী করে GRP ময়নাতদন্ত করল, সেই প্রশ্নও তুলতে শুরু করেছে পরিবারের সদস্যরা। এখন কীভাবে এই মৃতদেহ সৎকার করা হবে তা নিয়ে কোনও সদুত্তর মেলেনি।
Rudra Narayan Roy