এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে হারাতে নিচুতলায় বিজেপি-র সঙ্গে বাম-কংগ্রেসের মতো দলগুলির জোটের সম্ভাবনা আরও উস্কে দিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ৷ যদিও বিজেপি সাংসদের সেই প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী৷
এ দিন দুর্গাপুরে সৌমিত্র খাঁ বলেন, 'তৃণমূল ভার্সেস আমরা সবাই৷ তৃণমূলকে বাদ দিয়ে আমাদের সঙ্গে যারাই আসবে, আমরা সবাইকে নিয়ে তৃণমূলকে হারাতে চাই৷ নিচু স্তরে কোনও বুথে যদি কেউ অন্য কারও সমর্থন নিয়ে তৃণমূলকে হারাতে পারে, তাহলে আমরা তার সঙ্গে আছি৷' সৌমিত্র স্পষ্ট করে দেন, অন্য দলের সঙ্গে জোট নিয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দলের শীর্ষ নেতৃত্বই নেবেন, কিন্তু নিচুস্তরে অলিখিত ভাবে বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে তৃণমূলকে হারানোর বিষয়ে আপত্তি নেই তাঁর৷
advertisement
আরও পড়ুন: মহিলাকে কুপ্রস্তাবের অভিযোগ! দাঁইহাট পুর -চেয়ারম্যানকে পদত্যাগের নির্দেশ তৃণমূলের
বিজেপি সাংসদের এই প্রস্তাবকে অবশ্য খারিজ করে দিয়েছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী৷ সৌমিত্র খাঁ-কে কটাক্ষ করে তাঁর জবাব, 'বিষ্ণুপুরের সাংসদের বার্তা বিজেপি-র নেতারাও শোনে না৷ তিনি নিজে কংগ্রেস থেকে তৃণমূল হয়ে আবার বিজেপি-তে গিয়েছেন৷ আরও কোথাও ঘোরার আগ্রহ থাকতে পারে৷ বিজেপিকে সমর্থন দিয়ে তৃণমূলকে হারানোর কোনও মানে নেই৷ কারণ তাহলে ভোটের পর আবার দেখা যাবে মুকুল রায়ের মতো তৃণমূলকে হারিয়ে আবার তৃণমূলেই ফিরে আসবে৷ বিজেপি-র সাহায্য নিয়ে তৃণমূলকে হারানোর ভাবনা বাস্তবে সম্ভব নয়, অলীক কল্পনা৷'
নন্দকুমারের যে সমবায় সমিতির নির্বাচন ঘিরে এত আলোচনা, সে প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তীর দাবি, 'আমি এখন নন্দকুমারেই আছি৷ বরাবর যাঁরা এই সমবায় পরিচালনা করেছেন, তাঁরাই করবেন৷ বিজেপি বা তৃণমূলের সংস্রব না থাকে সেটা আমরা নিশ্চিত করব৷ মানুষের ঐক্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ৷'
বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদের প্রস্তাবকে খারিজ করে দিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও বলেন, 'সারা ভারতবর্ষ থেকে আমরা বিজেপিকে উৎখাত করতে চাই৷ পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও আমাদের অবস্থান একই৷ কোনও অবস্থাতেই বিজেপি-র সঙ্গে সমঝোতা হবে না৷ তৃণমূলকে হারাতে সমমনোভাবাপন্ন দলগুলির সঙ্গে আমরা অবশ্যই জোট করব৷ কিন্তু তাই বলে কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির সমঝোতা হবে? সূর্য তাহলে পশ্চিম দিকে উঠবে৷'
আরও পড়ুন:তৃণমূলকে হারাতে জোট বাঁধল সিপিএম-বিজেপি! পঞ্চায়েত ভোটের আগে শুভেন্দুর জেলায় নয়া মডেল
এ দিন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত একটি বৈঠকে যোগ দিতেই দুর্গাপুরে যান পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাঢ়বঙ্গের জন্য বিজেপি-র পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পাওয়া সৌমিত্র খাঁ৷ তাঁর দাবি, তৃণমূল পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২০১৮ সালের মতো সন্ত্রাসের আশ্রয় নিলে ২০১৯-এর মতো ২০২৪-এ তার জবাব দেবে সাধারণ মানুষ৷
তবে বিজেপি সাংসদের বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার প্রস্তাবকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন৷ তিনি বলেন, 'সমবায় সমিতির ভোটকে কেন্দ্র করে সার্বিক রাজনীতির বিচার করা মুর্খামি৷ এর আগে
বিরোধী দলনেতা, রাজ্য বিজেপি-র সভাপতিও একই আবেদন করেছে৷ বাম- কংগ্রেস ইতিমধ্যে শূন্যে নেমে গিয়েছে৷ বিজেপি-র এত দৈন্য দশা তারা সামান্য পাটিগণিত ভুলে গিয়েছে যে শূন্যর সঙ্গে গুন করলে শূন্যই হয়৷'